পাতা:গীতগোবিন্দ - বিজয়চন্দ্র মজুমদার.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থ ও গ্রন্থকার । কৰি জয়দেব, গোবিন্দ-লীলা বর্ণনা করিয়া গীত রচনা করিয়াছিলেন। কাব্যের নাম “গীতগোবিন্দ”, এবং মুখবন্ধের একটি শ্লোকে ও কাব্যের স্বরূপ বর্ণনায়, "মধুর-কোমল-কান্ত পদাবলী”র কথা উল্লিখিত আছে । পদাবলী কথাটা, নবম শতাব্দী এবং তৎপরবর্তী সময়ের “নববৈষ্ণব” ধৰ্ম্মের সাহিত্যে, গীত বা গান অর্থেই প্রচলিত। এ কথা লষ্টয়া বিচার করিবার একটা সার্থকতা আছে। বিচাৰ্য্য এই যে, গীতগোবিন্দ”-এ যে ২৪টি গান আছে, কেবল উহাই কবির রচনা, না-সর্গভঙ্গ এবং প্রারম্ভের অতিরিক্ত অক্ষর-ছলে রচিত শ্লোকগুলিও তাহার রচনা । মুখবন্ধের তৃতীয় শ্লোকে উক্ত হইয়াছে যে, কাব্যথানি মধুর-কোমল-কান্ত পদাবলীর সমষ্টি । ২৪টি গানই পদাবলী ; উহা মাত্রা-ছন্দে রচিত স্বরতালযুক্ত গান। সেইগুলিই কেবল লালিত্যে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছে। অন্ত শ্লোকগুলি অক্ষর-ছন্দে রচিত ; সেগুলি পদাবলী বা গান নহে । আরম্ভস্থচক অনেক কবিতা, এবং সর্গভঙ্গের শ্লোকগুলি ললিত বা সরস বলিতে পারি না। পাঠকের তাহার দৃষ্টান্ত পাইবেন । “আদ্যোৎ-সঙ্গ বসৎ ভূজঙ্গ” প্রভৃতিতে যথেষ্ট সাপের বিষ আছে ; এবং অনেক শ্লোকেই বিরহী বিরহিণী ছাড়া, পাঠক-পাঠিকারও “কৰ্ণজর” জন্মে। কাজেই সন্দেহ হয়, যে কি জানি কোন জয়দেবের শিষ্য, গীতগুলিকে অখণ্ড ভাবে একখানি “খণ্ডকাব্য” বা মহাকাব্য করিয়া গড়িয়া তুলিবার ইচ্ছায়, গানগুলির প্রথমে ও শেষে অনেক শ্লোক রচনা করিয়া দিয়াছিলেন । } f