পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

টমি।

করিলেন। বিশেষতঃ পিতা যখন স্পষ্ট বুঝাইয়া দিলেন, যে তাঁহার পৌত্রহীনতা ভগবানের বিশেষ দয়ার লক্ষণ, কারণ পাঁচটা পাশ-কর ছেলে কোন্‌ না এখন আর দশ হাজার টাকা আনিবে, তখন আমি বড় বিপদে পড়িলাম।

 আমার স্ত্রী যখন পিতার অভিপ্রায় জ্ঞাত হইলেন তখন তাঁহার মুখ শুকাইয়া গেল, মুখখানি ভারও হইল! দুই জনে নীরবে বসিয়া রাত্রি কাটাইয়া দিতাম, প্রবোধ দিতেও ভরসা হইত না। কি বলিয়া প্রবোধ দিব? মাতা যে বধূকে একেবারে ভালবাসিতেন না, তাহা নহে; তবে দশ হাজার টাকার লোভ সম্বরণ করাও তাঁহার পক্ষে অসম্ভব। তবুও গোপনে গোপনে তিনি বধূকে অনেক ঔষধ সেবন করাইয়াছিলেন ও অনেক দেবতার পূজা মানিয়াছিলেন। তাহার পর দেবতা বোধ হয় মুখ তুলিয়া চাহিলেন। মাতা একদিন সানন্দে পিতাকে আগু পৌত্রমুখ দর্শনের সম্ভাবনার কথা জানাইলেনু। আমিও আশু বিপদের হাত হইতে রক্ষা পাইলাম মনে করিয়া একটু নিশ্চিন্ত হইলাম। পিতা কিন্তু ক্ষুণ্ণ হইলেন।

 বিধিলিপি কে খণ্ডন করে। যথাসময়ে তিনি মাতার বাঞ্ছা পূর্ণ করিলেন, মাতা পৌত্রমুখও দর্শন করিলেন; কিন্তু পৌত্র দিবালোক দর্শন করিবার পূর্ব্বেই দেহত্যাগ করিয়াছিল—তিনি মৃতপুত্র প্রসব করিয়াছিলেন। মাতার শোকের ও দুঃখের অবধি রহিল না। কিন্তু পিতা যেন আশ্বস্ত হইলেন। এবং আমার বিনিময়ে (দ্বিতীয়বার) দশ সহস্র রজতখণ্ড অর্জ্জনে এইবার কৃতসঙ্কল্প হইলেন। অযত্নে ও দুঃখে তিনিও এই সময়ে মৃতপুত্রের অনুসরণ করিবার বিশেষ

৮৫