পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

কহিতেছে না; কেবল মুখ গুঁজিয়া কাঁদিতেছে। পুরুষ তিনজনের মধ্যে দুইজন আমাদিগের পূর্ব্ব-পরিচিত, একজন নূতন। সে দুয়ারের নিকট বসিয়া তামাক সাজিতেছিল।

 কিশোরী চৌধুরী মহাশয়ের একমাত্র পুত্র। চৌধুরী মহাশয় বাল্যকালে কলিকাতায় পড়িতে আসিয়াছিলেন, তিনি রিচার্ডসন সাহেবের ছাত্র। সেক্সপীয়ারের নাটকগুলি আদ্যোপান্ত আবৃত্তি করিতে পারিতেন, তাঁহার ধারণা ছিল যে কলিকাতা ভিন্ন আর কোথাও প্রকৃত শিক্ষা হয় না। কিশোরী যখন বড় হইয়া উঠিল, তখন স্কুল কলেজে দেশ ভরিয়া গিয়াছে, কিন্তু তাহা সত্ত্বেও,আত্মীয়স্বজনের অনুরোধ উপেক্ষা করিয়াচৌধুরী মহাশয় তাহাকে কলিকাতায় পাঠাইতে কৃতসংকল্প হইলেন। কিশোরী কলিকাতায় আসিল, কিন্তু সুশিক্ষার পরিবর্ত্তে কুশিক্ষায় মনঃসংযোগ করিল। সে ধনীর সন্তানের ন্যায় বাস করিত, কলিকাতার ধনী সম্প্রদায়ের সন্তানগণের সহিত মিশিত, শিক্ষিত সমাজের দিকে কোন কালেই আকৃষ্ট হয় নাই। দলে পড়িয়া সে অল্প বয়সেই মদ্যপান করিতে শিখিয়াছিল, কুস্থানেও যে যাইত না তাহা নহে।

 একমাত্র পুত্র বলিয়া চৌধুরী মহাশয় তাহার ব্যয়বাহুল্য দেখিয়াও কোন কথা বলিতেন না। কিশোরী কলিকাতায় থাকিয়া মাসে দুই তিন শর্ত টাকা ব্যয় করিত। পূজার সময় কিশোরী তাহার দুই তিন জন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করিয়া গ্রামে আনিয়াছিল, ইহারা তাহার নিত্য সহচর,— কলিকাতার কোন বিখ্যাত বংশজাত হইলেও অত্যন্ত দুশ্চরিত্র। দুয়ারের কাছে বসিয়া যে তামাক সাজিতেছিল, সেই কিশোরীর অধঃপতনের মূল। কিশোরী যখন প্রথম কলিকাতায় যায়, তখন চৌধুরী মহাশয় তাহার সঙ্গে

১০৬