পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিজয়া।

একজন বালকভৃত্য দিয়াছিলেন। নিতাই পিতৃমাতৃহীন, আশৈশব চৌধুরী মহাশয়ের গৃহে পালিত। কলিকাতার গিয়া, মনিবের ন্যায়, সেও পরিবর্ত্তিত হইয়া গিয়াছিল। সেই কিশোরীর গতিবিধি গোপন করিয়া রাখিত, কিশোরীকে এমন সাবধান করিয়া চলিত যে, চৌধুরী মহাশয় কোন কথাই জানিতে পারিতেন না। নিতাই আর একজন পাইকের সহিত বিজয়াকে ধরিয়া আনিয়াছিল, কিন্তু কিশোরী তাহা জানিত না। নিতাই বলিতেছিল,—"দাদাবাবুর মনটা এখনও নরম আছে, তিনি জেগে থাক্‌লে আমাকে যেতে দিতেন না।” তাহা শুনিয়া একজন বলিলেন, “কিরণ, মেয়েটাকে ছেড়ে দে, কিশোরী শুন্‌লে কি মনে ক’র্‌বে।”

 কিরণ। দেখ্‌ সুরেন, তোর মনে যদি এত ধর্ম্মভাব থাকে ত আমাদের সঙ্গে মিশিস্‌ নি।

 দ্বিতীয় ব্যক্তি কোন উত্তর না দিয়া বিজয়ার বাঁধন খুলিয়া দিল। সে গায়ের কাপড় সামলাইয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। প্রথম ব্যক্তি মদ্যপান করিতেছিল; সে তাড়াতাড়ি গেলাস রাখিয়া বলিয়া উঠিল,—“দেখ্‌ কিরণ, ন্যাকামি করিস্‌ নি।” নিতাই হাসিয়া বলিয়া উঠিল—“ও যাবে কোথায় বাবু, আমি দোর আগলে বসে আছি।” বিজয় ভরসা পাইয়া চুপ করিয়া ছিল, তাহার কথা শুনিয়া আবার কাঁদিতে আরম্ভ করিল। কিরণবাবু কি বলিতেছিলেন, এমন সময় একটা দম্‌কা বাতাস আসিয়া ঘরখানিকে কাঁপাইয়া তুলিল, বাহিরে একটা ভীষণ শব্দ হইল, তাহার সঙ্গে লোক দুইজন চীৎকার করিয়া উঠিল। নিতাই তাড়াতাড়ি দরজা খুলিয়া বাহিরে গেল, সুরেনবাবুও তাহার পিছনে পিছনে দেখিতে গেলেন। বিজয়া দুয়ারের দিকে অগ্রসর হইতেছিল, কিরণ তাড়াতাড়ি তাহার

১০৭