পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

বলিতেন ঠিক সময়ে মালক্ষ্মী ঘোষবংশের বাস্তুভিটা ছাড়িয়াছেন। মেয়েটার বিবাহ দিয়া স্ত্রী-পুরুষে কাশী চলিয়া যাইব, বাড়ীঘর পড়িয়া যাইবে, তাহা আর আমাকে চোখে দেখিতে হইবে না। মিত্র গোষ্ঠীর সহিত ঘোষ বংশের প্রকাশ্য বিবাদ না থাকিলেও পরস্পরের মধ্যে সম্ভার ছিল না। এক-পুরুষের জমিদার বলিয়া অনেকেই সদাশিব মিত্রকে উপহাস করিতেন, মিত্র মহাশয়ও অন্নহীনের বুনিয়াদী চাল সম্বন্ধে নানান কথা বলিতেন।

 মণিলাল, সদাশিব মিত্রের একমাত্র পুত্র, মিত্র মহাশয়ের আরও অনেক গুলি সন্তান হইয়াছিল, কিন্তু তাহার কেহই বাঁচিয়া নাই। হারা-মরা বলিয়া মণিলাল বড়ই আদরের। মণিলাল বড়ই দুষ্ট, গ্রামের কোন “ছেলের সহিত তাহার বনে না। তাহার গুণের মধ্যে একটি, সে পড়াশুনায় বড়ই মনোযোগী। এই জন্যই তাহার পিতা দুষ্টামির জন্য তাহাকে কিছু বলেন না। মণিলাল যতদিন সহরে ছিল, ততদিন কাহারও সহিত মিশিত না, কিন্তু দৌলতপুরে আসিয়া তাহার এক আশ্চর্য্য পরিবর্ত্তন দেখা গিয়াছিল। সুরমার সহিত কোথায় তাহার পরিচয় হইয়াছিল তাহা কেহই বলিতে পারে না। সে ক্রমশঃ সুরমার বশীভূত হইয়া পড়িয়াছিল। তাহার কথার বাধ্য হইয়া সুরমাকে সময়ে সময়ে মিত্র বাড়ী যাইতে হইত, আর সেতো সমস্ত দিনই মুরমাদের বাড়ী কাটাইয়া দিত। সদাশিব মিত্র নিষেধ করিয়াও মণিলালের সুরমাদের বাড়ী যাওয়া বন্ধ করিতে পারেন নাই। প্রবোধ বাবুও প্রকাশ্যে কিছু না বলিলেও মনে মনে চটিতেন। কিন্তু উভয় গোষ্ঠিতেই ইহাদের যাতায়াত সহিয়া গিয়াছিল।

১১৮