পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

অভিভাবকগণ ভাবিয়া কুলকিনারা পাইল না। তাহারা বোধ হয় একমনে ভগবানকে ডাকিয়াছিল, কারণ এক বৎসর যাইতে না যাইতেই নিরুপায়ের উপায় স্বয়ং পথ দেখাইয়া দিলেন। বৎসরের শেষে বার্ষিক অধিবেশনের দিনে সভার একজন বিশিষ্ট সভ্যকে খুঁজিয়া পাওয়া গেলনা। গ্রীষ্মের ছুটির পরে এই সভ্যটিকে নীরবে বিবাহিতের দলে মিশিয়া যাইতে দেখিয়া পুলিন ও প্রবোধ ক্রোধে ও ক্ষোভে পাগল হইয়া উঠিল। সভার দিনে ভারতের ইতিহাস হইতে বিশ্বাসঘাতকতার দৃষ্টান্তগুলি খুঁজিয়া বাহির করিয়া পুলিন যখন সেই তালিকার শেষে এই সভ্যের নামটি যোগ করিয়া দিল, তখন করতালির ধ্বনিতে সভাগৃহ মুখরিত হইয়া উঠিল। এই নূতন বিশ্বাসঘাতকটি যদি তাহা শুনিতে পাইত, তাহা হইলে হয় তো মাটিতে মিশিয়া যাইত, না হয় নিজের মস্তকে বজ্রাঘাত প্রার্থনা করিত।

 কিন্তু পুলিন ও প্রবোধের ওজস্বিনী বক্তৃতা সত্ত্বেও সভার সভ্যসংখ্যা কমিতে লাগিল। বিশ্বাসঘাতক নীচাশয় কন্যাকর্ত্তার দল ও অর্থলোলুপ অপরিণামদর্শী বরকর্তাগণ একে একে এই নূতন চিরকুমার সভার সভাগুলিকে ভাঙ্গাইয়া লইতে আরম্ভ করিল। বক্তৃতা করিয়া পুলিন ও প্রবোধের গলা ভাঙ্গিয়া যাইবার উপক্রম হইল, সভাগৃহের অনেকগুলি টেবিল ভাঙ্গিয়া গেল, কিন্তু তাহাসত্ত্বেও সভ্যসংখ্যা কমিতে লাগিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটী উপাধি পাইয়া পুলিন যখন নূতন উপাধি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হইল, তখন সভার অবস্থা দেখিয়া তাহার বুক ভাঙ্গিয়া গেল। বাঁকে ঝাঁকে কন্যাদায়ুপ্রপীড়িতদুর্ব্বত্ত্বগণ সভার সভ্যসংখ্যা হ্রাস করিতে লাগিল, দুই একজন নূতন সভ্য আসিল বটে, কিন্তু তাহাতে ক্ষতির

১৫৪