পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আহ্বান।

 ইন্দু ভাবিল, একি তবে সে নহে? তবে কি তাহার ভুল হইয়াছে? সে আরও অগ্রসর হইয়া দেখিল; না—সেই বটে। সেই চক্ষু দুইটি, সেই আকর্ণবিশ্রান্ত ভ্রূযুগল, কেবল কপোলে ও ললাটে চন্দনরেখা নাই। ইন্দু যতক্ষণ তাহাকে দেখিতেছিল, ততক্ষণ গায়কও তাহার দিকে চাহিয়াছিল। ইন্দু স্থির করিল যে, তাহার শ্যামসুন্দর আজ ছদ্মবেশে আসিয়াছে; আজি কিছুতেই পরিচয় দিবে না, সুতরাং জিজ্ঞাসা বৃথা। অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া শেষে জিজ্ঞাসা করিল “আবার কবে আসিবে?” গায়ক আশ্চর্য্য হইয় তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল, তাহার পর ধীরে ধীরে বলিল, “আপনি কে? আমিত আপনাকে কখনও দেখি নাই!” ইন্দু বলিল “তবে কি আমাকে চিনিতে পারিতেছেন না?” উত্তর হইল “না”। ইন্দু হতাশ হইয়া বসিয়া পড়িল, ভাবিল শ্যামসুন্দর আজ বড়ই দুষ্ট হইয়াছে, কিছুতেই মানিবেনা। এমন সময়ে পশ্চাৎ হইতে কে ডাকিল “ইন্দু”, কিন্তু ইন্দু তাহা শুনিতে পাইল না। গায়ক তখন নূতন গান ধরিয়াছে—

“ওহে জীবনবল্লভ।
আমি অপরাধ যদি করে থাকি পদে,
না কর যদি ক্ষমা,
তবে পরাণপ্রিয়, দিওহে দিও
বেদনা নব নব।”

 পশ্চাতে পদশব্দ হইল। ইন্দু তাহা শুনিতে পাইল না। তাহার ভ্রাতৃবধু ধীরে ধীরে তাহার পশ্চাতে আসিয়া দাঁড়াইলেন। ইন্দু চমকিয়া ফিরিয়া দাঁড়াইয়া তাহাকে দেখিতে পাইল। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন

৬৫