গুচ্ছ।
আসিয়াছি, আমাকে চরণে ঠাঁই দেও।” মাতা ও পুত্রী পতিতার অশ্রুজলের সহিত অশ্রুধারা মিশাইয় তাহাকে বুকে টানিয়া লইলেন!
* * * * * *
উষাকাল হইতে বারাণসীর প্রধান প্রধান মন্দিরের পথে শত শত অভাগিনী রমণী ভিক্ষার জন্য বস্ত্রাঞ্চল বিছাইয়া বসিয়া থাকে। অগ্রহায়ণ মাস সবে আরম্ভ হইয়াছে, প্রভাতে বেশ শীত অনুভূত হয়। কেদার-ঘাটের পথে দাঁড়াইয়া একটি বাঙ্গালী রমণী চীৎকার করিয়া যাত্রীদিগকে উত্যক্ত করিতেছে “ওগো লক্ষ্মী মা, দুটী ভিক্ষে দাও মা, আমার কেউ নাই মা।” কমণ্ডলু ও পুষ্পপাত্র হাতে লইয়া জনৈক বর্ষীয়সী বিধবা কেদার দর্শনে যাইতেছিলেন, তাঁহার পট্টবস্ত্রের অঞ্চল ধরিয়া একটি দ্বাদশবর্ষীয় গৌরবর্ণ বালক তাঁহার অনুগমন করিতেছিল। বৃদ্ধাকে দেখিয়া রমণী আরও চীৎকার করিতে লাগিল। বৃদ্ধা তাহার কণ্ঠস্বর শুনিয়া চমকিয়া দাঁড়াইলেন, দয়ার্দ্রচিত্তে জিজ্ঞাসা করিলেন “তোমার নাম কি মা, বাড়ী কোথায়?” রমণী উত্তর করিল, “মাগো। আমার নাম বাম, আমার বাড়ী ন’দে জেলা, বন্দীপুর, আমার সবই ছিল মা, বরাতের দোষে এমন হ’য়েছে।” বৃদ্ধার পশ্চাতে নম্ন আসিতেছিল, বৃদ্ধ তাহাকে বলিলেন “নসু একে একটা টাকা দেও দাদা।” বালক ভিখারিণীকে একটি টাকা দিল, বৃদ্ধার নয়নদ্বয় হইতে দুইটি উষ্ণ বারিবিন্দু পতিত হইল।