পাতা:গুপ্ত রহস্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৩৪ সংখ্যা।

করিয়াছে ও আমার ঘরস্থিত দ্রব্যাদি অপহরণ করিবার চেষ্টা করিতেছে। আরও দেখিলাম আমার ঘরের পশ্চাৎ দিকের দেওয়ালে একটী প্রকাণ্ড সিঁদ হইয়াছে। বুঝিলাম ঐ সিঁদের মধ্য দিয়াই চোরগণ আমার ঘরে প্রবেশ করিয়াছে। আমি স্ত্রীলোক, বিশেষ ঐ ঘরের মধ্যে আমি একাকী শুইয়াছিলাম। হঠাৎ নিদ্রা ভঙ্গ হইলে, ঘরের ভিতর দস্যুদিগকে দেখিয়া আমি একেবারে হতবুদ্ধি হইয়া পড়িলাম। আমার মুখ দিয়া একটা কথাও বহির্গত হইল না। এরূপ অবস্থায় সাহসিক পুরুষগণের অবস্থা যেরূপ হইয়া থাকে তাহা আপনারা অবগত আছেন। আমি স্ত্রীলোক, এরূপ অবস্থা দৃষ্টে সেই সময় আমার অবস্থা যে কিরূপ হইয়াছিল তাহা আর আপনাদিগের নিকট আমাকে বলিতে হইবে না। বিশেষ সেই অবস্থা বর্ণন করিবার ক্ষমতাও আমার নাই। আপনারা অনায়াসেই আমার সেই সময়ের অবস্থা অনুমান করিয়া লইতে সমর্থ হইবেন।

 আমার নিদ্রা ভঙ্গ হইবার সঙ্গে সঙ্গে ঐ দস্যুগণের মধ্যস্থিত দুই ব্যক্তি আমার সন্নিকটে আসিয়া দণ্ডায়মান হইল। উহাদিগের মধ্যে এক জনের হস্তে এক খানি তীক্ষ ছুরিকা বা ভোজালী ছিল। সে ঐ অস্ত্র খানি আমার বুকের নিকট ধরিয়া, আমাকে কহিল, এখন যদি তুই কোনরূপ গোলযোগ করিবি বা চেঁচাইবার জন্য বা কথা কহিবার চেষ্টা করিবি তাহা হইলে দেখিবি এই তীক্ষ্ণ অস্ত্র এখনই তোর বুকের ভিতর প্রবিষ্ট হইবে।

 সেই সময় অপর ব্যক্তি কহিল তোর বাক্স প্যাঁটরা প্রভৃতির চাবিগুলি কোথায়? উহা আমাদিগকে এখনই প্রদান কর। নতুবা আমার হস্তে এখনই তুই শমন সদনে গমন করিবি।