পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহশ্ৰী \ტ\ტ মহাশয় বড়ই আনন্দ লাভ করেন ; বাড়ীর কৰ্ত্তা ভোলা-মহেশ্বর ; কে র্তাহাকে কৰ্ত্তা বলিয়া বুঝিবে ? কে খাইল, কে না খাইল-কাহার চিকিৎসার দরকাব, কাহার কি টাকার দরকার, ইহাই তিনি দেখিতেছেন ; সকলের তহবিল এক ; তাহা কৰ্ত্তার হাতে,- অথচ কৰ্ত্তা নিজের সুখ একবারটিও ভাবেন না। কবিরাজ মহাশয, গৃহ-কৰ্ত্তার জামাতার চিকিৎ সার জন্য আহত হইয়াছিলেন-পাশ্বে অল্পবয়স্ক স্ত্রী বসিয়া শুশষ করিতেছিলেন। কবিরাজ মহাশয় কৰ্ত্তাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ মেয়েটি কি আপনি দোজ-বরে দিয়াছেন? জামাতার বয়স একটু বেশী দেখিতেছি।” কৰ্ত্তা বলিলেন, “দোজ-বারই বটে” এবং মুদুস্বরে বলিলেন, “সে কথা আপনাকে গোপনে বলিব ।” তারপর কবিরাজ মহাশয়কে নির্জনে বলিলেন, “আমার মেয়েটি মারা গিয়াছে, কিন্তু জামাই চিরকাল আমাদের সংসারে আছেন, র্তাহার মায়া আমরা ছাড়িতে পারি নাই এবং তিনিও আমাদিগকে ছাড়িতে সন্মত নন, এজন্য কি করি, তাহার আর এক বিয়ে দিয়ে সেই স্ত্রীকে এখানে রাখিয়াছি। স্ত্রীটি লক্ষ্মী, সে আমার মেয়ে বই কি ?” এই বিপুল সংসার চালাইবার পক্ষে কৰ্ত্তার ইঙ্গিতই মূল-মন্ত্র। যেরূপ কোন বৃহৎ পাদপকে আশ্রয় করিয়া ছোট ছোট তরু-গুল্ম ও লতা বিকাশ পায, তঁহারই স্নেহগুণে শতাধিক লোক সেইরূপ আবদ্ধ, বহু আত্মীয় একত্ৰ থাকায় যে ত্যাগ স্বীকার ও প্রীতির দরকার, তাহার চিত্র আমরা এদেশ ভিন্ন কোথায় দেখিব ? স্বামী-স্ত্রী একত্ৰ থাকিয়াও অনেক স্থলে ঝগড়া করে। পিতা-পুত্ৰে মুখ দেখা-দেখি নাই,- অথচ এক বাড়ীতে আছেন। এমন দৃশ্যও যেমন বিরল নহে, তেমনি যৌথ পরিবারে পূর্ণত্যাগ ও ধৰ্ম্মভাবও আমরা মধ্যে মধ্যে দেখিতে পাই। আমাদের কোনটি অনুকরণীয় ? আমরা কোনটি ছাড়িয়া কোনটি ধরিব ? আমরা সর্বদা স্বার্থের মধ্যে ডুবিয়া থাকিব, না, নিঃস্বাৰ্থ হইব ? আমরা কেবল নিজের