পাতা:গৌড়ের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড).djvu/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ অধ্যায়। ১৫৩ স্পৰ্দ্ধা করিত। উড়িয়া ভাষার সিদ্ধান্ত উড়ম্বরগ্রন্থে আছে, রাজা প্রতাপাদিত্যের সময় হইতে তাহাদিগের অবস্থা হীন হইতেছে । সম্ভবতঃ হাড়ি, ডোম ও বাউরি জাতি এই যুগে বৌদ্ধধৰ্ম্মাবলম্বী ছিল। পালরাজগণ বৌদ্ধধৰ্ম্মের মহাযান-মতাবলম্বী ছিলেন । তবে, সকলেই বজ্রবারাহী, বজ্রতারা,বজ্রভৈরবী প্রভৃতি শক্তিদেবীর উপাসনাও করিতেন । এই সময়ে মহাকালের উপাসনা তান্ত্রিক-বৌদ্ধসমাজে প্রবেশ করে। মহা কাল ধৰ্ম্মের দ্বারপাল ছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় কিরীটেশ্বরীর স্থান পূৰ্ব্বে বৌদ্ধদেবালয় ছিল বলিয়া অনেকের বিশ্বাস । তথাকার ভৈরবমূৰ্ত্তি ধ্যানী বুদ্ধের মূৰ্ত্তি বলিয়া অনুমিত হয়। পালবংশের রাজত্বকালে রাঢ়দেশে বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রাধান্ত ছিল। রাঢ়দেশের বৌদ্ধমূৰ্ত্তি সকল ঈষৎ পরিবর্তিত আকারে বাকুড়ারায়, স্তামরায় ও ভৈরব নামে হিন্দুদেবশ্রেণীতে প্রবিষ্ট হইয়াছে। নেপালের বৌদ্ধ হারীতী দেবী বঙ্গদেশে শীতলা হইয়াছেন। এই বংশের রাজত্বকালের শেষভাগে বৌদ্ধমত ও পাৰ্ব্বতীয় অসভ্যদিগের ধৰ্ম্মমতের মিশ্রণে উৎপন্ন তান্ত্রিকমত প্রাধান্ত লাভ করে । সমুদয় বৌদ্ধ বিহারে তান্ত্রিক বৌদ্ধমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। বৌদ্ধবিহারের অস্তিত্ব পৰ্য্যন্ত লোকে বিস্মৃত হইতে আরম্ভ করে। পালরাজগণ বিদ্যার উৎসাহ দাতা ছিলেন। যদিও উদন্তপুর বিহার, পালরাজগণের পূৰ্ব্বে স্থাপিত হয়, তথাপি সেই বিহার ও বিক্রমশীলা বিহার, ইহাদের ব্যয়ে ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হইত। এই রাজত্বকালে বাঙ্গালী জাতি কর্তৃক তিব্বত চীন প্রভৃতি দেশে ভারতীয় জ্ঞানের বিমল জ্যোতি, বিকীর্ণ হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রের অত্যন্ত শ্ৰীবৃদ্ধি হয়।