পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

চাঁদের উপরকার অবস্থা

যেখানে এককালে আগ্নেয়-পর্ব্বতের এত উপদ্রব ছিল, সেখানে যে আমাদের পৃথিবীর মত সমতল স্থান থাকিতে পারে না, তোমরা অনায়াসে তাহা আন্দাজ করিতে পার। সত্যই চাঁদের উপরে এক যাইল লম্বা ও এক মাইল চওড়া একটা সমতল জায়গা মেলা কঠিন। তোমাদের ফুট্‌বল্ খেলার মত একটু ছোট সমতল জায়গাও বোধ হয় চাঁদে মেলে না। তাহাতে কেবল পাহাড়ের পর পাহাড়, উঁচু জমির পর নীচু জমি যেন সাজানো আছে। পৃথিবীর মত নরম মাটিও বোধ হয় সেখানে পাওয়া যায় না। বড় বড় আগ্নেয় পর্ব্বত হইতে গলা ধাতু জমাট বাঁধিয়া মাটি এমন শক্ত করিয়া রাথিয়াছে যে, তাহা কলের লাঙ্গল দিয়া খুঁড়িতে গেলেও খোঁড়া যায় না।

 তোমরা ভূগোলে পড়িয়াছ, পৃথিবীর উপরে মোটে একভাগ স্থল এবং বাকি তিন ভাগ সমুদ্র। চাঁদে কিন্তু সমুদ্র কম। হিসাব করিলে দেখা যায়, চাঁদের উপরটাকে যদি তিন ভাগ কর, তাহা হইলে কেবল এক ভাগ সমুদ্র ও বাকি দুই ভাগ স্থল হইয়া দাঁড়ায়। চাঁদে সমুদ্রের চিহ্ন থাকিলেও, সে সমুদ্রে কিন্তু এখন এক-বিন্দুও জল নাই। কাজেই আগেকার কথা ছাড়িয়া দিলে বলিতে হয়, চাঁদে এখন সবই স্থল; সেখানে এখন জলের নাম গন্ধও নাই। জল থাকিলে মেঘ হইত এবং মেঘে চাঁদের উপরটা ঢাকা পড়িয়া যাইত; তখন আমরা চাঁদের গায়ের কালো কালো দাগগুলিকে স্পষ্ট দেখিতে পাইতাম না। কিন্তু চাঁদের কলঙ্ককে ত আমরা কখনই অস্পষ্ট দেখিতে পাই না। কাজেই মানিয়া লইতে হয় চাঁদে জল নাই।