পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৪
গ্রহ-নক্ষত্র

 ফুট্‌বলের সেই ছোট রবারের থলি অর্থাৎ ব্লাডারের ভিতরে তুমি যে বাতাসটা পম্প্ করিয়া দাও, তাহা বাহিরে অনেকটা জায়গা জুড়িয়া থাকে। কাজেই বাহিরের অনেকটা বাষ্পকে জোর করিয়া যখন ছোট ব্লাডারের মধ্যে পোরা যায়, তখন বাতাসকে সঙ্কুচিত করা হয়। সদ্য সদ্য পম্প্ করার পরে তুমি যদি ব্লাডারে হাত দাও, তবে দেখিবে রবারের উপরটা গরম হইয়াছে। বাইসিকেল্ গাড়ীর চাকায় যে রবারের টায়ার অর্থাৎ গদি লাগানো থাকে, তাহার ভিতরে জোর করিয়া যখন অনেক বাতাস পম্প্ করা যায়, তখন সেটাও গরম হইয়া পড়ে। কাজেই দেখা গেল, বাষ্পীয় জিনিস সঙ্কুচিত অর্থাৎ আকারে ছোট হইয়া পড়িলে তাহাতে তাপের সৃষ্টি হয়।

 সূর্য্য এতকাল ধরিয়া ক্রমাগত তাপ বিলাইয়া কেন আজও ঠাণ্ডা হইতেছে না, ইহার কারণ দেখাইতে গিয়া পণ্ডিতেরা ব্লাডার গরম হওয়ার কথাই বলিয়াছেন। সূর্য্য আমাদের পৃথিবীর মত মাটি-পাথর দিয়া গড়া নয়, উহার দেহে কেবল বাষ্পই আছে। বাষ্প জিনিসটার আর একটা প্রধান গুণ এই যে, ঠাণ্ডা পাইলেই তাহা আকারে খুব ছোট হইয়া আসে। কাজেই সূর্য্যের দেহের বাষ্প তাপ ছাড়িয়া ক্রমে ঠাণ্ডা হইয়া আসিতেছে এবং সঙ্গে সঙ্গে তাহার দেহ সঙ্কুচিত হইতেছে। কিন্তু দেহ সঙ্কুচিত হইলে তাহাতে তাপ জন্মে, তাহা আমরা আগেই বলিয়াছি। সুতরাং দেখা যাইতেছে, সূর্য্যের দেহ যেমন ঠাণ্ডা হইয়া সঙ্কুচিত হইতেছে, তেমনি সঙ্কুচিত হওয়ার দরুণ সঙ্গে সঙ্গে তাহাতে তাপেরও সৃষ্টি হইতেছে। ‘যত্র আয় তত্র ব্যয়’, কাজেই এত তাপ খরচ করিয়াও সূর্য্য ঠাণ্ডা হইতে পারিতেছে না।