পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২শুe હૌલ ૭ ઃિ । অনন্তর আত্মাকে স্বষ্টিমধ্যে সন্নিবিষ্ট করা হইল কি ভাবে ? তৎসম্বন্ধে প্লেটো বলিতেছেন, পরমেশ্বর আত্মাকে স্বষ্টিচক্রের ঠিক মধ্যস্থলে স্থাপিত করিলেন এবং তথা হইতে উহা স্বট ক্রের ভিতর বাহিরু সৰ্ব্বত্র ব্যপ্ত হইল। বাহিরভাগে—এমন কি দূরতম প্রান্ত-চন্দ্র স্বৰ্য্য নক্ষত্ররাজি ছাড়াইয়া যাহা কিছু আছে, তাহার অতিক্রম করিয়— আত্মা পরিব্যাপ্ত হইল। আত্মার বহিশচক্র ও অন্তশ্চক্রের সংস্থান বিধান মত, বহিশচক্র বাহিরে এবং অন্তশ্চক্র অন্তরে রহিয়া, নিজেদের আবৰ্ত্তনশীলতা হেতু, স্বষ্টিকেও সৰ্ব্বদা আবৰ্ত্তনের বশবৰ্ত্তী করিল (১৭) এবং তাঁহার এই আবৰ্ত্তন ও আত্মার ব্যাপনশীলতা হইতে, কৃষ্টি অস্তিত্ব ছিল । অকৰ্ম্মকশক্তি ভূত এবং সকৰ্ম্মকশক্তি চৈতন্য । তাহদের বিশ্বাস, এই চৈতন্তই ঈশ্বর ; সকৰ্ম্মক শক্তি অকৰ্ম্মক শক্তিতে সংযোজিত হইলেই সৃষ্টি প্রচার হয় । সকৰ্ম্মক শক্তি নিত্য, দেহশূন্ত এবং অবিনাশী ; কিন্তু অকৰ্ম্মকশক্তির ভাব তাহার বিপরীত, স্বতরাং তাহাতে ধ্বংস আছে। জিনের এই সকৰ্ম্মক এবং অকৰ্ম্মক শক্তির সহিত প্লেটোর বহিশচক্র ও অন্তশ্চক্র এবং হিন্দুর পুরুষ প্রকৃতি, ইহাদের উভয় উভয়তঃ স্বভাব তুলনা করিলে, এখানেও পরম্পরে মধ্যে কতকটা একতা লক্ষিত হয় । (১৭) Plato Tim ro-12. এই স্থান দৃষ্টে অনেকে সিদ্ধাস্ত করিয়া থাকে যে, প্লেটোর এতদুভয় চক্রের তাৎপৰ্য্য এরূপ যে, এই সংসারে কিছুরই উন্নতি বা অবনতি নাই । আমরা যাহাকিছু উন্নতি বা অবনতি বলিয়া দেখি, তাহা ক্ষণিক বৈচিত্র, নতুবা একই বিষয় বারংবার ঘুরিয়া ফিরিয়া যাইতেছে আসিতেছে মাত্র। প্রাচীন কালের যে সকল মানবীয় বা যে কোন ইতিহাস শুনিতেছি এবং এখন আবার যাহা দেখিতেছ, তাহাই পুনঃ ফিরিয়া পর পর আসিবে ও যাইবে। জাতীয় উন্নতি ও অবনতি প্রভৃতি কেবল ভ্ৰম । পৌরাণিক কল্পমন্বন্তরাদির কল্পনাও এরূপ বটে এবং তাহাও যেন কতকটা একইবিধ স্থাষ্টর পুনঃ পুনঃ আগতি এবং বিরতি শিক্ষা দেয়। সে যাহা হউক, হিন্দুপুরাণ এবং প্লেটো, এ উভয়েরই নিগুঢ় যে ঠিক সেরূপ, এমনটা বোধ হয়না । অথবা চক্রবৎ পরিবর্তনই যদি ধরিয়া লওয়া যায়, তাহা হইলেও একই পথে পুনঃ পুনঃ চক্র চালনা করিলে যে একই খুলা উড়াইতে হইবে, এমন কোন কথা নাই; বিশেষতঃ ইহাও পুনঃ বলা হইতেছে যে, নিত্য বিভিন্নতাই অস্তশ্চক্রের ধৰ্ম্ম ।