পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२830 গ্রীক ও হিন্দু। আসক্তিতে কোন কাম্য বা কাৰ্য্যচিন্তায় রত হইলেন, এমন সময়ে সহসা মনে উঠিল,—‘মরিতে হইবে, অমনি তাহার সকল বন্ধন ঢিলী হইয়া পড়িল, সকল আসক্তি অবসল্প হইয়া আসিল ; ইহাই হিন্দুচরিত্রে নিত্য দৃশু। কি শোচনীয় দৃশু ! কিন্তু কি আশ্চৰ্য্য, এমন রত্নপ্রস্থ ভারত, তথাপি ইহাতে এমন ব্যাখাকারক আজিও জন্মিল না যে, তত্ত্ববিদ্যাসমূহের সদ্ব্যাখ্যাপূর্বক হৃদয়গ্রাহী ও ফলোপধায়ক ভাবে এরূপ শিক্ষণ দিতে পারক হয় যে, ইহজীবনের যেকোন প্রকারের কার্য্যই হউক না কেন, সংযত ও সাত্ত্বিকভাবে সম্পাদিত হইলে, তাহ সৰ্ব্বদাই পরমপুরুষার্থের অংশ কলারূপে সহায়তা করিয়া থাকে। তত্ত্ববিদ্যার অসদ্ব্যাখ্যান বা ভ্রান্ত অনুভূতি, যাহারই ফলে হউক, ক্ষুণ্ণ শিক্ষিত হিন্দুদিগের মধ্যে আর একটি মহৎ অনিষ্ট সাধিত হইয়াছে ; ইহা তাহাদিগকে ঘোর অদৃষ্টবাদী করিয়া তুলিয়াছে। এ কথার উল্লেখ করিতাম না, কিন্তু ক্ষুণ্ণ শিক্ষিতগণ লইয়াই প্রধানতঃ সমাজ ; দ্বিতীয়তঃ তাহাদের অবলম্বিত যে অদৃষ্টবাদ, তাহ বড় বিকৃত ও অনিষ্টকারী,— প্রকৃত শাস্ত্রীয় নির্দোষ অদৃষ্টবাদ নহে। একে হিন্দুর ঘরে বাহিরে ছন্নছাড়া বিকৃত মায়াবাদ, তাহার উপরে আবার এই দুষিত অদৃষ্টবাদ ; একে মায়াবাদে রক্ষা নাই, তাহার উপরে আবার এই অদৃষ্টবাদের চাপাচাপি ! মায়াবাদও অদৃষ্টবাদের ন্যায় এই তত্ত্ববিদ্যারই বিকৃত ব্যাখানের ফল। অতি শোভনীয় প্রাসাদস্থলী হইতে কৃষকের ক্ষেত্র বা রাখালের মাঠে পৰ্য্যন্ত, যেখানে যাইবে, সেইখানেই দেখিবে বিকৃত্ত মায়াবাদ ও দুষিত অদৃষ্টবাদীiসৰ্ব্বত্র পরিব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছে ; সবাই কহিতেছে, এ সংসার কেবল মায়ার কাও ; সবাই বলিতেছে, আমার সুখ দুঃখ, কৰ্ম্ম অকৰ্ম্ম, কৰ্ম্মণ্য অকৰ্ম্মণ্যভাব, সকলই অদৃষ্টবশে ঘটতেছে, তাহার উপর আমার শক্তি কি? যাহ করাইতেছে, আমি কেবল তাঁহাই