পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 গ্রীক ও হিন্দু। মানসিক বৃত্তি যে সেই পরিমাণে সতেজ হইয়াছে, সেই উৎকর্ষ ভাবই তাহার পরিচায়কস্বরূপ হয় । সুতরাং বাহাজগৎ হইতে ভাবগ্রহণে ও তাঁহার উপরে কার্যকরণে, মানসিক বৃত্তি সেই পরিমাণে পটুত লাভ করিয়া থাকে। কিন্তু মানসিক বৃত্তির মধ্যে অনুভব ও কল্পনা অর্থাৎ চিত্তশক্তিই সৰ্ব্বাগ্রে ফুরিত ও সতেজ অবস্থা প্রাপ্ত হয়, তাহার পর কালে বুদ্ধি ও কালে যুক্তি-শক্তি তেজস্বিতা প্রাপ্ত হইয়া থাকে। শ্রদ্ধাশক্তি, চিত্ত, বুদ্ধি ও যুক্তি, এতৎত্ৰয়ের যেন পরিণাম স্বরূপ হওয়াতে উহা সকলেরই সঙ্গে ও সৰ্ব্বাবস্থায় সহানুভূতিযুক্ত থাকে ; এ নিমিত্ত কেবল চিত্তশক্তির সঙ্গেও শ্রদ্ধার সমাবেশ দেখিতে পাওয়া যায়। বরং ইহাও বলা যাইতে পারে যে, চিত্তের সঙ্গে শ্রদ্ধার যতটা সমাবেশ বুদ্ধি বা যুক্তি বা তদুভয় সমষ্টি, ইহার কাহারই সঙ্গে ততটা নহে । শ্রদ্ধার কার্য্য বিষয়বিশেষে বিশ্বাস স্থাপন। যখন স্থানভ্রষ্টতা ও অবস্থাচু্যতি ও বিপৎপাত ইত্যাদি উৎপাত শূন্ত সুখলালিত উদ্ভিন্নজ্ঞান শৈশবকালে, তখনই চিত্তশক্তি ফুরিত হয় ও আধিক্য প্রাপ্ত হইয়া থাকে। তদ্রুপ উদ্ভিন্ন জ্ঞান শৈশবের ন্যায়, মানবীয় কালের এই প্রথম উৎকর্ষযুক্ত অবস্থার উদয় সময়ে, চিত্তশক্তিরই আধিক্য হওয়ার কথা । হিন্দুর পূর্বপুরুষেরা গ্রীকদিগের অপেক্ষ পরে বহির্গত হওয়াতে, স্বীয় স্থানে ও অবস্থায় তাহাদের সুস্থতাবশতঃ, চিত্তশক্তির সেই আধিক্য অপেক্ষাকৃত অধিক পরিমাণেই প্রাপ্ত হইয়াছিলেন বলিতে হইবে ; এবং এরূপ কারণ হেতুই, যেমন ইহাদের সভ্যতা অগ্ৰে উদয় হইবার কথা বলিয়াছি, তেমনি কল্পনাপ্রস্থত বিদ্যাউদ্ভাবনে ও নিগৃঢ় ধৰ্ম্মবিশ্বাসস্থাপনে এবং তদনুশীলনেও, ইহার গ্রীকদিগের অপেক্ষণ অনেক অগ্রে অনেক উৎকর্ষলাভে সমর্থ হইয়াছিলেন । যাহা হউক, অতঃপর এইরূপ উৎকর্ষ বা অপকর্ষ ভাব