পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१९ গ্ৰীক ও হিন্দু । বিষয়ে, বল দেখি পৃথিবীর কোন জাতি তোমার সমকক্ষ ? কিন্তু তথাপি দেখ, কেমন তুমি আপনাকে ভুলিয়া ফিরিঙ্গী সাজিতে সতত লালায়িত হও । ইহার কারণ ?—তোমার পূর্বপুরুষেরা যাহা ছিল, তুমি এখন তাহ নাই ; তুমি এখন কি বহির্বিকাশ কি মানসিক বৃত্তি, সকল বিষয়েতে ইতর হইয়া পড়িয়াছ ; তাই তোমার অনুকরণবৃত্তিও এখন এত প্রবল হইয়া পড়িয়াছে ; তাই তোমার জ্ঞানদৃষ্টিতে হীনতা ঘটায়, এখন এমন কি, আর তোমার পিতৃগণের প্রতি লক্ষ্য ও তাহাদের দৃষ্টান্ত দর্শন পর্য্যস্ত তোমার বুদ্ধিতে আসিয়া জুটে না । শ্রেষ্ঠ ইতরকে আকর্ষণ করিলেও, স্বাভাবিক নিয়মে, শ্রেষ্ঠ যে সেও সংস্রবগুণে কিছু না কিছু সংক্রমিত না হইয়া যায় না ; তবে বিশেষ এই যে, ইতর অর্থাৎ প্রকৃতির অননুগৃহীত যাহারা, তাহারাই অপেক্ষাকৃত অত্যধিক পরিমাণে সংক্রমণের বিষয়ীভূত হইয়া থাকে। ব্যবহারিক কারণবশে, একজাতীয় আচার ব্যবহার আদি বিবিধ বিষয়, আর এক জাতির উপরে আরোপিত হয় এবং উক্ত আরোপ হেতু, সেই সেই বিষয় মনুষ্যের যে বিশেষ প্রকৃতিবশে উৎপন্ন, তৎ তৎ প্রকৃতিও আসিয়া ক্রমে আরোপিতের উপরে বৰ্ত্তে। সুতরাং ব্যবহারিক কারণবশে, কি ব্যক্তি কি জাতি, উভয়েতেই, কতক পরিমাণে প্রকৃতি পরিবর্তনও ঘটিয়া থাকে। যে যেমন আচার ব্যবহার অবলম্বন করে, তাহার প্রকৃতি ও মতিগতিও যে সেইরূপে কতকটা পরিবৰ্ত্তিত হয়, ইহা নিত্যই প্রত্যক্ষগোচর হইয়া থাকে। এইস্থত্রে আরও একটা কথা বক্তব্য যে, যখন কোন এক বিভিন্ন শ্রেণীর আচার ব্যবহার আদি অবলম্বন হেতু, আমাদের আত্ম-প্রকৃতি পৰ্য্যন্ত তদনুরূপ ও তৎপরিমাণ অনুরূপ পরিবর্তিত হওয়ার কথা ; অন্ত কথায় আত্মপ্রকৃতি পৰ্য্যন্ত তাহাতে যখন কতকটা হারাইতে হয় ;