পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ S90 ঘরে কি যেন করছিল, দরজা খুলল না, ভেতর থেকেই আমায় বসতে বলল। বসে আছি তো বসেই আছি, দরজা আর খােলে না। দু'বার ডাকলাম, সাড়াও দিলে না । শেষে আমি যখন ডেকে বললাম, আমার কাজ আছে আমি চললাম, একটা যাচ্ছেতাই জবাব দিলে। --কি বললে ? -সে আমি উচ্চারণ করতে পারব না । -আমার সম্বন্ধে কোন কথা ? --না। তোমার সম্বন্ধে কি কথা বলবে ? একটা বিশ্ৰী ফাজলামি করলে, একেবারে ইতরামি যাকে বলে । আরও কিছুক্ষণ বসিয়া, কালীর সঙ্গে একটু ভাব জমানোর চেষ্টা করিয়া সরাসী চলিয়া গেল। সরাসীকে কালী পছন্দ করে না, রাজকুমারের সঙ্গে তাকে কথা বলিতে দেখিলেই তার মুখ কালো হইয়া হইয়া যায়। এক মিনিটের বেশী কাছে থাকিতে পারে না। কিন্তু ঘুরিয়া ঘুরিয়া বার বার কাছে আসে। সরসী আর রাজকুমারের মুখের দিকে তাকায়, ঠোঁট কামড়ায়, হঠাৎ একটা খাপছাড়া কথা বলে, দুপদাপ পা ফেলিয়া চলিয়া যায়। সেদিন মনোরমার তিরস্কারের পর কালী কেমন বদলাইয়া গিয়াছে। মনোরমা যতটুকু সাজাইয়া দেয় তার উপর সে নিজে নিজে আরেকটু বেশী করিয়া সাজ করে। গায়ে একটু বেশী সাবান ঘষে, মুখে একটু বেশী সাবান মাখে, একটু বেশী দামের কাপড় পরে। সরসী চলিয়া যাওয়ামাত্র সে বলিল,-এই মেয়েটা এলে আপনি পৃথিবী ভুলিয়া যান। -এই মেয়েটা আবার কে কালী ? --যার সঙ্গে এতক্ষণ গল্প করলেন-আপনার সরসী ! -ওকে তুমি সরসীদি বলবে। -আমার বয়ে গেছে। ওকে দিদি বলতে । মুখ উচু করিয়া ঠোঁট ফুলাইয়া সিধা হইয়া কালী মুর্তিমতী