পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

কি করিলে সেই দূর-নিক্ষিপ্ত অগ্নি-গোলক মুহূর্ত্তে বহু লোককে নিহত করিতে পারে, ইহাই ছিল গান্-ক্লাবের সদস্যদের একমাত্র চিন্তার বিষয়। কামান, বারুদ এবং গোলাগুলির পরীক্ষা করিতে যাইয়াই তাঁহারা দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারাইতেন। কিন্তু সেদিকে কাহারও লক্ষ্য ছিল না! কিসে বেশী মানুষ মারিতে পারা যায়, কামান, গোলা ও বারুদের সেইরূপ ব্যবস্থা করিতে পারিলেই তাঁহারা নর-জন্ম সার্থক বলিয়া মনে করিতেন!

 দেশে যে সকল যুদ্ধ-বিগ্রহ হইতেছিল, সহসা একদিন তাহা থামিয়া গেল। বিদেশেও চারিদিকে শান্তি স্থাপিত হইল। গান্‌-ক্লাবের সদস্যেরা দেখিলেন সর্ব্বনাশ উপস্থিত! আর ত’ নরহত্যা করিবার সুযোগ নাই! নব-আবিষ্কৃত কামান ও গোলার শক্তি যে কত উন্নত হইল, তাহা ত’ আর পরীক্ষা করিবার উপায় নাই! মর্টার, হাউইজার প্রভৃতি তখন গড়ের মধ্যে কর্ম্মহীন হইয়া পড়িয়া রহিল, গোলাগুলি স্তূপীকৃত হইয়া মুক্ত প্রান্তরে মরিচা ধরিতে লাগিল। গান্-ক্লাবের, নির্ম্মিত কামানের গোলায় একদিন যেখানে রণক্ষেত্রে ছোট-বড় শত শত গভীর গর্ত্ত হইয়াছিল, কৃষকগণ সে সকল পূর্ণ করিয়া আবার হলকর্ষণ করিতে লাগিল। সদস্যেরা দেখিলেন একে একে তাঁহাদের কীর্ত্তি-চিহ্নগুলিও বিলুপ্ত হইয়া যাইতেছে! সমরক্ষেত্রে সে শোণিত লেখা নাই—গভীর গহ্বর নাই—পুঞ্জীকৃত কঙ্কালরাশি আর তাঁহাদের গোলার শক্তি প্রচার করে না! সর্ব্বনাশ! এ কি হইল। আমেরিকার সকল যুদ্ধ-বিগ্রহ একেবারে মিটিয়া গেল!

 ক্লাবের কক্ষে আর সভা বসিত না। কেনই বা বসিবে কাজ ত’