কিছু ছিল না। দুই চারিজন প্রধান প্রধান সদস্য ভিন্ন কেহ আর তখন ক্লাবে আসিত না। দেশী-বিদেশী রাশি রাশি সংবাদপত্র টেবিলের উপর পড়িয়া থাকিত, কেহ মোড়ক পর্য্যন্ত খুলিত না। কক্ষের প্রান্তে বেশ উজ্জ্বল হইয়া আগুন জ্বলিতেছিল। সেই আগুন পোহাইতে পোহাইতে মিষ্টার হাণ্টার বলিলেন,—“কি আপ্শোষের কথা! আমরা যে একেবারেই কুঁড়ে হ’য়ে পড়্লাম! হায় রে সেদিন, যেদিন কামানের শব্দে ঘুম ভাঙ্গত—আবার কামানের ধ্বনিতে অভিনন্দিত হ’য়েই ঘুমিয়ে পড়েছি। উঃ! জীবনটা দুর্ব্বহ ব’লে মনে হচ্ছে।” মিষ্টার হাণ্টার এতই উত্তেজিত হইয়াছিলেন যে তাঁহার কাঠ-নির্ম্মিত চরণখানি যে অগ্নি-স্পর্শে দগ্ধ হইতেছে, মোটেই সেদিকে তাঁহার দৃষ্টি ছিল না!
নিজের ভগ্ন-বাহুখানি প্রসারিত করিবার চেষ্টা করিয়া মিঃ বিল্স্বি কহিলেন,—“আর কি ভাই সে দিন ফির্বে! একটা কামান তৈরি হ’তে না হ’তেই অমনি তার পরীক্ষা আরম্ভ হ’তো। তারপর যেই শিবিরে ফিরেছি, অমনি বন্ধুদের মুখে কত জয়ধ্বনি! কি আনন্দ তাদের যে আমার কামানে সে দিন অনেক বেশী মানুষ মেরেছে! অমন আর হয় না—হ’বে না!”
মিষ্টার ম্যাট্সন্ ছিলেন এই সমিতির সম্পাদক। গাটাপার্চ্চায় নির্ম্মিত তাঁহার দক্ষিণ করটি চুলকাইতে চুলকাইতে নিতান্ত দুঃখিত চিত্তে তিনি কহিলেন,—
“তাই ত’ ভাই! নিকট ভবিষ্যতে যুদ্ধের ত’ কোনো সম্ভাবনা দেখ্ছি না। আজ সকালে চুপ করে বসে থাক্তে থাক্তে আমি একটা নূতন কামানের ছবি এঁকেছি! শুধু ছবি নয়—ছবি, মাপ, ওজন সব! এ