পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

অবিলম্বে একটী বিরাট শোভাযাত্রা বাহির হইল। শত সহস্র মশালের আলোকে বাল্‌টীমোর নগর আলোকিত হইয়া উঠিল! বাল্‌টীমোরবাসীরা ত’ সে শোভা-যাত্রায় যোগ দিলই—বিদেশীরাও আপন আপন মাতৃভাষায় কলরব করিতে করিতে আসিয়া শোভা-যাত্রার অঙ্গপুষ্টি করিতে লাগিল।

 সহসা তখন আকাশ মেঘমুক্ত হইল—চন্দ্র করে চারিদিক হাসিয়া উঠিল। বিমুগ্ধ জনমণ্ডলী সহস্র লোচনে চন্দ্রের দিকে চাহিল—সহস্রবদনে চন্দ্রের নামে জয়ধ্বনি করিল। বাল্‌টীমোরে যেন একটী জাতীয় উৎসব আরম্ভ হইয়া গেল। গৃহে গৃহে জিন্‌ ও হুইস্কির তরঙ্গ খেলিল— নৃত্য ও গীতের ধ্বনি উঠিল——জাহাজে জাহাজে শত দীপ জ্বলিয়া জ্বলিয়া জলে সোণা ছড়াইল। একজন চতুর দোকানদার এই সুযোগে শত শত দুরবীক্ষণ-যন্ত্র বিক্রয় করিয়া ফেলিল—কারণ তখন সকলেরই ইচ্ছা যে, নিত্যপ্রত্যক্ষের বিষয় হইলেও সেদিন চন্দ্রকে একবার ভালো করিয়া দেখে। রাজপথে, বিপণীতে, পান্থশালায়, চা’র দোকানে—পোতাশ্রয়ে, উদ্যানে যেখানে দশজন মিলিল, সেইখানেই চন্দ্রলোকের কথা আলোচিত হইতে লাগিল। সেইখানেই তর্ক উঠিল—সেইখানেই আবার তর্কের সীমাংসাও হইয়া গেল। রাত্রি যখন দুইটা বাজিল, তখন সহর কতকটা শান্ত হইল। সভাপতি বার্বিকেন বার বার স্কন্ধ হইতে স্কন্ধান্তরে নিক্ষিপ্ত হইবার জন্য নানা স্থানে আহত হইয়া ক্লান্তদেহে গৃহে ফিরিলেন।

 সভাপতি বার্বিকেন যখন সমিতির কক্ষে বক্তৃতা করেন, তখনই তাহার প্রত্যেকটী শব্দ তারযোগে ওয়াসিংটন, ফিলাডেল্‌ফিয়া, নিউইয়র্ক, বোষ্টন প্রভৃতি বিখ্যাত নগরে প্রেরিত হইতেছিল। যখন বাল্‌টীমোর আনন্দে

১২