পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যুক্তি-তর্ক

আরও ১৩ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ২০ সেকেণ্ড প্রয়োজন হইবে বলিয়া সিদ্ধান্ত হইয়া গেল।

 চন্দ্র বৃত্তাভাসে পৃথিবীর চতুর্দ্দিক ভ্রমণ করে বৃত্তাকারে নহে। ভ্রমণ করিতে করিতে যখন পৃথিবী হইতে দূরে সরিয়া যায়, তখন সে দুরত্ব ২৪৭৫৫২ মাইল। যখন উহা পৃথিবীর নিকটে আসে, তখনো পৃথিবী ১৮৬৫৭ মাইল দূরে থাকে। কাজেই চন্দ্র যখন পৃথিবীর নিকটে আসিবে, তখনই কামান ছুঁড়িবার উপযুক্ত সময়। প্রতি মাসে চন্দ্র একবার করিয়া পৃথিবীর অতি নিকটে আসে—কিন্তু সকল মাসেই শিরোবিন্দু বা Zenith অতিক্রম করে না। দীর্ঘকাল পর পর চন্দ্রের এই দুইটী অবস্থা যুগপৎ ঘটে। গণ্ডিতগণ সভাপতি বার্বিকেনকে জানাইলেন যে, আগামী বর্ষের ৪ঠা ডিসেম্বর তারিখে দ্বিপ্রহর রজনীতে বহুকাল পর চন্দ্রের এই বাঞ্ছিত অবস্থা ঘটিবে। তাহার পূর্ব্বে ১লা ডিসেম্বর রাত্রি ১০টা ৪৬ মিনিট ৪০ সেকেণ্ডের সময় চন্দ্রলোকে গোলা প্রেরণ করিতে হইবে—উহাই সর্ব্বাপেক্ষা উপযুক্ত সময়— কারণ তখন পৃথিবী হইতে চন্দ্রের দূরত্ব আরও কিছু কমিয়া যাইবে। এই মাহেন্দ্রক্ষণ ছাড়িয়া দিলে ১৮ বৎসর ১১ দিনের পূর্ব্বে চন্দ্র আর পৃথিবীর নিকটতম স্থানে আসিবে না। যখন তর্ক উপস্থিত হইল যে আকাশের কোন্ অংশ লক্ষ্য করিয়া কামান স্থাপন করিতে হইবে, তখন সিদ্ধান্ত হইল যে দক্ষিণ বা উত্তর অক্ষরেখার ০ (শূন্য) ডিগ্রী হইতে ২৮ ডিগ্রীর মধ্যে চন্দ্রকে লক্ষা করিয়া গোলা না ছুঁড়িলে উহার গতি ক্রমেই বক্র হইয়া উহাকে চন্দ্র হইতে বহুদূরে সরাইয়া লইয়া যাইবে। আবার প্রশ্ন হইল—গোলকটী যখন মহাশূন্যে নিক্ষিপ্ত হইবে, তখন চন্দ্র আকাশের কোন্ স্থানে থাকা

১৫