পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

কামান নির্ম্মাণ

 বার্বিকেন পরিতৃপ্ত-হৃদয়ে ষ্টোনিহিল্ হইতে নিকটবর্ত্তী টম্পানগরের পান্থশালায় ফিরিয়া আসিলেন। তাঁহার তখন মুহূর্ত্ত মাত্র অবসর ছিল না। এঞ্জিনিয়র মাচিসন্ সপ্তাইমধ্যে দুই সহস্র মজুর লইয়া কার্য্যারম্ভ করিলেন। জনহীন ষ্টোনিহিল অচিরে একটী নগর হইয়া উঠিল।

 কয়েক দিন ধরিয়া জাহাজ হইতে কেবল যন্ত্রাদি নামিল। কোদালি, কুঠার, খণিত্র—হাতুড়, বাটাল কত যে নামিল কে তাহার ইয়ত্তা করে। ভেদন-বস্তু, ছেদন-যন্ত্র—ছিদ্র করিবার, চাঁছিবার এইরূপ কত কার্য্যের জন্য কত যন্ত্র জাহাজে বোঝাই হইয়া আসিয়াছিল। ক্রেণ, এঞ্জিন, বয়লার, উলুন, রেলপথ—এমন কি লৌহ-নির্ম্মিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গৃহ পর্য্যন্ত টম্পানগরের বন্দরে নামানো হইল। ষ্টোনিহিল্ টম্পাবন্দর হইতে ১৫ নাইল দূর। বার্বিকেন এই ১৫ মাইল রেলপথ প্রস্তুত করিতে আরম্ভ করিলেন। একা বার্বিকেন এক সহস্র হইলেন। যেখানে অসুবিধা যেখানে মজুরদিগের মধ্যে অসন্তোষ, যেখানে কর্ম্মহানির লেশমাত্র সম্ভাবনা, সেইখানেই বার্বিকেন। কোনো বাধাই তাঁহার নিকট বাধা বলিয়া গণ্য হইত না। আবশ্যক হইলে তিনিও স্বহস্তে কুঠার ধরিতে লাগিলেন। স্বহস্তে মাটি কাটিতে লাগিলেন। তাঁহার অধ্যবসায় ও শ্রমশীলতা মজুরদিগের হৃদয়ে উৎসাহ আনিয়া দিল।

২৯