বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

 বার্বিকেন ১লা নভেম্বর টম্পানগর পরিত্যাগ করিয়া ষ্টোনিহিলে আসিয়াছিলেন। সেখানে তখন সারি সারি গৃহ উঠিয়াছে—গৃহে গৃহে কুলি-মজুর, স্থপতি, হুত্রধর, কর্ম্মকার প্রভৃতি বাস করিতেছে। কাষ্ঠের প্রাচীরে সেই নব-নির্ম্মিত নগর তখন সুরক্ষিত হইয়াছে। নগরের স্থানে স্থানে বৈদ্যুতিক আলোক জ্বলিয়া সকল অন্ধকার দুর করিয়া দিতেছে।

 ষ্টোনিহিলে আসিয়া বার্বিকেন সমুদয় মজুরদিগকে ডাকিয়া মিষ্ট বাক্যে কহিলেন,—“বন্ধুগণ! তোমরা বোধ হয় শুনেছ যে আমরা ৯০০ ফিট্ লম্বা একটী কামান তৈরি করে’ ঠিক সোজাভাবে মাটীর ভিতর বসাতে চাই। পাথরের কুড়ি ফিট্ বেষ্টনী দিয়ে কামানটী ঘেরা থাক্‌বে। কাজেই ৬০ ফিট্ প্রশস্ত এবং ৯০০ ফিট্‌ দীর্ঘ একটী কূপ খনন করা প্রয়োজন। এই বৃহৎ ব্যাপারটী সুসম্পন্ন হলে তবে আমাদের সকল শ্রম ও অর্থব্যয় সার্থক হবে। যদি তোমরা প্রতিদিন দশ হাজার ঘন ফুট্ মাটি কাট্‌তে পার তবেই উপযুক্ত সময়ে কাজটা শেষ হ’বে। আমি তোমাদেরই অধ্যবসায় ও কার্য্যপটুতার উপর নির্ভর করে’ বসে’ আছি।”

 মজুরগণ প্রাণপণে কাজ করিতে লাগিল। ওক-কাষ্ঠের একটী অতি সুদৃঢ় ও বৃহৎ চক্রের উপর প্রস্তরের বেষ্টনিটী সিমেণ্ট দ্বারা গ্রথিত হইতে লাগিল। কূপ খননের সঙ্গে সঙ্গে উহা ভূগর্ভে নামিতে লাগিল। এই বিপজ্জনক ও দুঃসাহসিক কর্ম্মে নিযুক্ত হইয়া মধ্যে মধ্যে দুই চারি জন গুরুতররূপে আহত হইতে লাগিল,—দুই একজন মরিয়াও গেল। কিন্তু সে জন্য কেহ নিরুৎসাহ হইল না। দিবসে দিবালোকে এবং রাত্রিতে অতি-তীব্র বৈদ্যুতিক আলোকে কাজ চলিতে লাগিল। হাতুড়ির ঠন্

৩০