পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কামান নির্ম্মাণ

কি বিস্ময়কর! সেই তরল লৌহরাশি যখন হু হু করিয়া কুপমধ্যে নামিতে লাগিল,—যখন লক্ষ লক্ষ অগ্নিকণা ঊর্দ্ধমুখে ছুটিতে লাগিল তখন মনে হইল, সহসা যেন একটী আগ্নেয়গিরি শির তুলিল! চারিদিকে ভূকম্পন আরম্ভ হইল।

 সত্য সত্যই কি কামানটী প্রস্তুত হইয়াছে? যদি না হইয়া থাকে তবেই ত সর্ব্বনাশ! আঠারো বৎসরের পূর্ব্বে চন্দ্রত আর পৃথিবীর নিকটতম হইবে না! নূতন কামান দেখিবার জন্য সকলেই তখন অত্যস্ত ব্যস্ত হইলেন। বার্বিকেনও যে না হইয়াছিলেন তাহা নহে—কিন্তু লোকে তাহা বুঝিতে পারিল না। লৌহ ঢালিবার পর এক সপ্তাহ গেল, সমিতির সদস্যগণ অধৈর্য্য হইয়া উঠিলেন। জারও এক সপ্তাহ গেল, তখনো কামানের নল দিয়া উত্তপ্ত বাষ্পরাশি ঊর্দ্ধে উত্থিত হইতেছিল—তখনো নিকটবর্ত্তী ভূমি স্পর্শ করিলে চরণতল দগ্ধ হইতেছিল! কাহার সাধ্য নিকটে যায়। কাহারও বারণ না মানিয়া ম্যাট্‌সন্ নিকটে যাইবার চেষ্টা করিলেন, এবং পুড়িয়া মরিতে মরিতে বাঁচিয়া গেলেন। ষ্টোনিহিলে তখন কাহারো প্রবেশাধিকার ছিল না। বার্বিকেনের আদেশে পূর্ব্ব হইতেই তাহার প্রবেশপথগুলি রুদ্ধ করা হইয়াছিল।

 একদিন প্রাতে ম্যাট্‌সন্ বিমর্ষচিত্তে কহিলেন,—

 “আর ত’ ৪ মাস মাত্র বাকি! কবেই বা কামানের ছাঁচটা সরিয়ে ফেলা হ’বে—কবেই বা নলটা মসৃণ হবে—আর কতদিনেই বা বারুদ ঢালা হ’বে। আজো কামানের কাছে যাবার যোটী নাই—”

 বার্বিকেন নীরবে এ কথা শুনিলেন, কিন্তু কোনো উত্তর দিলেন না। আরও কিছু দিন অতিবাহিত হইলে পর বার্বিকেন কামানের দিকে দশ

৩৩