পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

বাহির হইয়া দ্বাদশ শত নালায় কামানের বৃহৎ কূপে প্রবাহিত হইবে এইরূপ ব্যবস্থা করা হইয়াছিল!

 যেদিন স্থপতির কার্য্য শেষ হইল, বার্বিকেন তাহার পরদিন কর্দ্দম, বালুকা এবং খড়-কূটা একত্র মিলাইয়া কূপের ঠিক মধ্যস্থলে ৯ ফিট্ ব্যাসের ৯০০ ফিট্ দীর্ঘ কামানের একটা নল প্রস্তুত করিতে আরম্ভ করিলেন। এই নল এবং প্রস্তর বেষ্টনীর মধ্যে যে শূন্য স্থান ছিল, তাহারই ভিতর গলিত লৌহ ঢালিয়া কামান প্রস্তুতের বন্দোবস্ত হইয়াছিল।

 কামান ঢালাই করিবার দিন প্রভাতে ভীষণ অগ্নিকাণ্ড উপস্থিত হইল। সেই দ্বাদশ-শত চুল্লী দাউ দাউ করিয়া জ্বলিতে লাগিল। চিম্‌নীর মুখে হু হু করিয়া ধুম নির্গত হইতে লাগিল। ঊনিশ লক্ষ মণ কয়লার ধূমে দিঙ্মণ্ডল আচ্ছন্ন হইয়া গেল! চুল্লীগুলি দুই মাইল স্থান ব্যাপিয়া বৃত্তাকারে সজ্জিত ছিল। অগ্নিশিখার শব্দ বজ্রের ন্যায় ধ্বনিত হইতে লাগিল। স্থির হইল যে সাঙ্কেতিক কামানের শব্দ হইবামাত্রই একযোগে সকল কটাহ হইতে লৌহের স্রোত প্রবাহিত হইবে।

 সকল বন্দোবস্ত ঠিক করিয়া বার্বিকেন বন্ধুগণসহ নিকটবর্ত্তী একট উচ্চস্থানে কামান লইয়া দাঁড়াইলেন। বেলা ঠিক বারোটার সময় কামান দাগা হইল। কামানের ধ্বনি বাতাসে মিলাইতে না মিলাইতেই বারোশত কটাহের মুক্ত ছিদ্র-মুখে লৌহের স্রোত বহিতে লাগিল দ্বাদশশত অগ্নি-জিহ্ব সর্প যেন দ্বাদশ শত নালার ভিতর দিয়া কেন্দ্রস্থিত কূপের দিকে অগ্রসর হইল,—যেন তরল অগ্নি তরঙ্গের পর তরঙ্গ তুলিয়া নৃত্য করিতে করিতে ধাইল! এ দৃশ্য কি ভীষণ—কি প্রাণোন্মাদকারী—

৩২