পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কামান নির্ম্মাণ

আরম্ভ করিল। সঙ্গে সঙ্গে বিপুলায়তন এক একটী মালগুদাম নির্ম্মিত হইল, বাণিজ্য-বিষয়ক দৈনিক সংবাদপত্র পর্য্যন্ত বাহির হইতে আরম্ভ হইল। তখন যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাংশের সহিত টম্পানগরের সংযোগ ঘটাইবার জন্য নূতন রেলপথ প্রস্তুত হইয়া গেল।

 ধর্ম্মপিপাসু মানব যেমন একটী তীব্র আবেগ ও আকাঙ্ক্ষা লইয়া তীর্থ-দর্শনে গমন করে, সাত-সহস্র নর-নারী সেইরূপ আবেগের সঙ্গে ষ্টোনিহিলের দিকে ধাবিত হইল। তাহারা বাহির হইতে কামানটী দেখিয়াই নিরস্ত হইল না, ভূগর্ভে নয়শত ফিট্‌ নামিয়া কামানের তলদেশ পর্য্যন্ত দেখিতে লাগিল। নামিবার সুবিধার জন্য বৃহৎ বৃহৎ ক্রেণ আনাইয়া বার্বিকেন তাহার সঙ্গে আসন সংযুক্ত করিলেন। দর্শকগণ দর্শনী দিয়া সেই আসনে বসিয়া নির্বিঘ্নে পাতালে প্রবেশ করিতে লাগিল। বার্বিকেন পরে হিসাব করিয়া দেখিয়াছিলেন যে পাতালগামী যাত্রিগণের নিকট হইতেই তিনি ১৫৬২৫০০ টাকা দর্শনী পাইয়াছিলেন! এক শুভদিনে সমিতির কর্ম্মবীর সদ্যগণ কামানের তলদেশে, ভূ-পৃষ্ঠের নয়শত ফিট্ নীচে মহা সমারোহে ভোজন করিলেন। বৈদ্যুতিক আলোকে সেই অন্ধকার পাতাল দিনের মত হইয়া উঠিল। সদস্যগণ ঘোররবে জয়ধ্বনি করিতে লাগিলেন! সেই ধ্বনি মসৃণ নলের গাত্রে আহত হইতে হইতে পাতাল হইতে নয়শত ফিট্ ঊর্দ্ধে উঠিয়া বিপুল কামান গর্জ্জনের ন্যায় প্রতীয়মান হইল!

 ম্যাট্‌সন্ আনন্দে আত্মহারা হইয়া কহিলেন,—

 “সমস্ত পৃথিবীর রাজত্ব পেলেও আজ আমি এ স্থান ত্যাগ ক’র্‌ব না। এখনই যদি কেহ এই বিশাল কামানে বারুদ ভরে’ গোলা পূরে’

৩৫