পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

 বার্বিকেন এ কথাটা হাসিয়া উড়াইয়া দিয়া কহিলেন—“বাহিরের সৌষ্ঠব না হয় না-ই হ’লো। ভিতরটা আপনার পছন্দ সই করে নিন।”

 আর্দ্দান স্বীকৃত হইলেন।

 বার্ধিকেন মনে মনে বুঝিয়াছিলেন যে লোহার স্প্রীং যতই কেন ভালো না হউক, তাহাতে কাজ হইবে না। তাই তিনি জলের ব্যবহার করিলেন। গোলার মধ্যে তিন ফিট পর্য্যন্ত জল ঢালা হইল। সেই জলের উপর কাষ্ঠের একখানি চাক্‌তি রহিল। ইহা গোলার গায়ে এমন ভাবে লাগান হইল যে, ইচ্ছা মাত্রেই খুলিতে পারা যায়। এই নবীন ভেলার উপর বার্বিকেন যাত্রীদিগের বসিবার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। জলকে থাকে থাকে কয়েকভাগে বিভক্ত করিবার মানসে বার্বিকেন জলের মধ্যে পর পর কয়েকখানি কাষ্ঠচক্র রক্ষা করিলেন। সকলের উপরে রহিল যাত্রীদিগের চক্র। সেই চক্রের নিম্নেই অতি দৃঢ় স্প্রীং ছিল। বার্বিকেন বুঝিয়াছিলেন যে কামানের মুখ হইতে গোলা বাহির হইলেই যে প্রবল বাক্কা লাগিবে তাহাতে কাঠের চক্রগুলি একে একে ভাঙ্গিয়া গিয়া এক থাকের জল অপর থাকের জলের সহিত মিশিবে, কাজেই আরোহিদিগকে কোনো ধাক্কা সহ্য করিতে হইবে না! গোলক নিক্ষিপ্ত হইলে প্রথমে সম্মুখের দিকে এবং পরক্ষণেই পশ্চাতে ধাক্কা লাগিবার কথা। জলের এই অদ্ভুত স্প্রীং থাকিবার জন্য সম্মুখের ধাক্কা যে লাগিতে পারবে না ইহা বার্বিকেন দৃঢ়রূপে বিশ্বাস করিয়াছিলেন। পশ্চাতের ধাক্কাকে শক্তিহীন করিবার জন্য অতি উৎকৃষ্ট স্প্রীংএর উপর নির্ভর করিতে হইল। গোলকের ভিতরটী পকেট-ঘড়ীর স্প্রীংএর ন্যায় কোমল অথচ সুদৃঢ়, স্প্রীংএর উপর পুরু গদি বসাইয়া মণ্ডিত হইয়াছিল।

৬০