পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরীক্ষা

 এই সকল আয়োজন দেখিয়া মাইকেল আর্দ্দান্ কহিলেন,—“এততেও যদি ধাক্কা লেগে আমাদের হাড়-গোড় ভাঙ্গে, তবে তা ভাঙ্গুক।”

 গোলকে প্রবেশ করিবার দ্বার উহার ক্রমশঃ সূক্ষ্ম শিরোভাগে গঠিত হইয়াছিল। যাহাতে ভিতরদিক হইতে অতি দৃঢ়ভাবে সে দ্বার রুদ্ধ করিতে পারা যায় বার্বিকেন ভালো করিয়া সে ব্যবস্থা করিয়াছিলেন।

 গোলকে উঠিয়া চন্দ্রলোকে গমন করিলেইত যথেষ্ট হইল না। যাইতে যাইতে চতুর্দ্দিকের পরিদৃশ্যমান জগৎ বিশেষরূপে পরীক্ষা করিয়া দেখিবারও আবশ্যক ছিল। সেই জন্য স্প্রীংএর গদির নিম্নে কাচের ৪টী জানালা বসানো হইয়াছিল! দুইটী গবাক্ষ দুই পার্শ্বে, একটা শিরোদেশে এবং আর একটা তলে নির্ম্মিত হওয়ায় মহাশূন্যে গমনকালে পরিত্যক্তা ধরণী, ক্রমোজ্জ্বল চন্দ্রলোক এবং গ্রহ-নক্ষত্রখচিত অনন্তব্যোম দেখিবার আর কোনো অসুবিধা ছিল না। এই কাচগুলি যাহাতে ভাঙ্গিয়া না যায়, সে জন্য ধাতুর আবরণ দ্বারা সেগুলি এরূপভাবে আবৃত ছিল যে, গোটাকতক স্ক্রু খুলিলেই জানালার কাচ আপনা হইতেই খুলিয়া যাইত।

 গোলকে যাহাতে আলোক ও উত্তাপের অভাব না হয় সে জন্য অত্যন্ত অধিক চাপে আবদ্ধ গ্যাস লওয়া হইল। একটী নলের মুখ খুলিলেই গ্যাস বাহির হইত। বার্বিকেন ছয়দিনের যোগ্য আহার্য্য, পানীয় ও গ্যাস লইলেন। কোনোরূপে জীবনধারণের জন্য যাহা প্রয়োজন শুধু যে সেই সকল দ্রব্যই গোলকে লওয়া হইল তাহা নহে, যাহাতে বেশ সুখে-স্বচ্ছন্দে থাকিতে পারা যায় তাহারও বন্দোবস্ত

৬১