পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

করা হইল। যদি স্থান থাকিত তাহা হইলে মাইকেল আর্দ্দান্ সুকুমার শিল্পের একটী কর্ম্মশালাই সঙ্গে লইতেন।

 আহার্য্য পেয়ঃ এবং আলোকের পরই বাতাসের ব্যবস্থা করা হইল। গোলকের মধ্যে স্বভাবতঃ যে বাতাসটুকু ছিল, তাহা তিন জনের চারি দিনের শ্বাসপ্রশ্বাস কার্য্যেরও যোগ্য ছিল না। বার্বিকেনের সঙ্গে তাঁহার কুকুর দুইটীও যাইতেছিল। সুতরাং পাঁচটী প্রাণীর জন্য প্রতি চব্বিশ ঘণ্টায় অন্ততঃ ৩২ সের অক্সিজেন গ্যাসের প্রয়োজন ছিল। একুশ ভাগ অক্সিজেন এবং ঊন-আশি ভাগ এজোটের মিশ্রণে বাতাস জন্মে। আমরা যখন নিশ্বাস লই, তখন অক্সিজেন শরীরে প্রবেশ করে এবং প্রশ্বাসের সঙ্গে এজোট বাহির হয়। বদ্ধস্থানে শ্বাসপ্রশ্বাস-ক্রিয়া বেশীক্ষণ চলিলে বাতাসের অক্সিজেন ফুরাইয়া গিয়া শুধু কার্ব্বনিক এসিড, গ্যাস থাকে। উহা তখন তীব্র বিষের কার্য্য করে। বার্বিকেন দেখিলেন, গোলকে যে পরিমাণ অক্সিজেন ব্যয়িত হইবে তাহা প্রস্তুত এবং প্রশ্বাসিত কার্ব্বনিক এসিড্ গ্যাসের ধ্বংস সাধন করিতে পারিলেই গোলক মধ্যে বায়ুর অভাব হইবে না।

 বার্বিকেন স্থির করিলেন, ক্লোরেট্‌-অব্-পটাশ এবং কষ্টিক-পটাশ ব্যবহার করিলেই এ উদ্দেশ্য সফল হইবে। চারি শত ডিগ্রী উত্তাপে ক্লোরেট্-অব্-পটাশ, ক্লোরিণ-অব্-পটাশিয়মে রূপান্তরিত হয় এবং উহার ভিতর যে অক্সিজেন থাকে, তাহা বাহির হইয়া পড়ে। নয় সের ক্লোরেটৃ-অব্-পটাশে সাড়ে তিন সের অক্সিজেন গ্যাস পাওয়া যায়। বার্বিকেন দেখিলেন, ২৪ ঘণ্টার জন্য উহাই যথেষ্ট। বাতাসে যে কার্ব্বনিক এসিড্ গ্যাস থাকে, ক্লোরেট্‌-অব্-পটাশ প্রতি মুহূর্ত্তে তাহা টানিয়া লয়।

৬২