পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

একটী শক্তিশালী বৈদ্যুতিক যন্ত্র ষ্টোনিহিল হইতে দুই মাইল দুরে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। বহু লৌহ-স্তম্ভের শিরে আবদ্ধ করিয়া সেই তারটী বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সহিত সংযুক্ত করা হইল। বার্বিকেন স্থির করিয়াছিলেন যে উপযুক্ত সময়ে এই যন্ত্রের সাহায্যে বারুদে আগুন দিবেন।

 বারুদের কার্ত্তুসগুলি নিরাপদে কামানে স্থাপিত হইলে পর কাপ্তান নিকল্ পরাজয় স্বীকার করিয়া তাঁহার তৃতীয় বাজির টাকা বার্বিকেনের হস্তে প্রদান করিলেন।

 মাইকেল আর্দ্দানের তখন আদৌ অবসর ছিল না। তিনি নানাবিধ আবশ্যক দ্রব্যাদি সংগ্রহ করিতেছিলেন। তাপমান যন্ত্র, দুরবীক্ষণ, সৌর-জগতের মানচিত্র, বন্দুক, গুলি, কোদালি, কুঠার প্রভৃতি সমস্তই তিনি গোলার মধ্যে তুলিলেন। সাধারণ ও অসাধারণ শীত এবং গ্রীষ্মের উপযুক্ত পরিচ্ছদাদিও সংগৃহীত হইল। ছোট ছোট কৌটায় নানারূপ শস্যের বীজ এবং কয়েকটী গাছের চারা পর্য্যন্ত লওয়া হইল। মাংস এবং অন্যান্য খাদ্য-সামগ্রী ইতিপূর্ব্বেই কলের সাহায্যে পিষ্ট হইয়া ক্ষুদ্রকায় বর্ত্তুলাকার করা হইয়াছিল। আর্দ্দান্ এক বৎসরের উপযুক্ত খাদ্যসামগ্রী লইলেন। দুই মাস চলিতে পারে, এই পরিমাণে জল ও ব্রাণ্ডি লওয়া হইল। বার্বিকেন্ তখন পূর্ব্ব কথিত মত জলের স্প্রিংএর উপর বসিবার আসন প্রস্তুত করিলেন এবং বাতাসের অভাব দূর করিবার জন্য দুই মাসের উপযুক্ত ক্লোরেট-অব্-পটাশ ও কষ্টিক্-পটাশ লইলেন।

 তখনো কাপ্তান নিকল্ কহিতেছিলেন,—“কিছুতেই গোলা চল্‌বে না!”

৬৬