পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাত্রার আয়োজন

 বার্বিকেন্। কেন?

 নিকল্। ক্রমে ক্রমে গোলাটা যেমন ওজনে ভারি হয়ে উঠল, কামানের মধ্যে বসাতে গেলেই সব কার্ত্তুসগুলো জ্ব’লে উঠবে ৷

 এ কথা শুনিয়া বার্বিকেন্ গম্ভীরভাবে বলিলেন, “আচ্ছা দেখা যাক্।”

 তিনি পূর্ব্বেই অতিশয় দৃঢ় ভার-উত্তোলক একটী ক্রেণ আনিয়াছিলেন। তাহার শিকলগুলি অতি সাবধানতার সঙ্গে পরীক্ষা করিয়া বার্বিকেন্ গোলাটী তুলিবার ব্যবস্থা করিলেন। তখন তাঁহার ও গান্ ক্লাবের সদস্যদিগের চিত্তে যে কি আকুলতা উপস্থিত হইয়াছিল, তাহা বর্ণনা করা যায় না। সকলেই ভাবিতে লাগিলেন, শিকল ত ছিঁড়িবে না? যদি ছিঁড়িয়া যায়, তবেইত সর্ব্বনাশ! গোলা বিপুল বেগে কামানের তলদেশে যাইয়া পড়িবে এবং তৎক্ষণাৎ সেই আঘাতেই কার্ত্তুস জ্বলিয়া উঠিবে! ধীরে—অতি ধীরে যন্ত্রের সাহায্যে গোলকটী কামানের মধ্যে নামিতে লাগিল—ক্রমে ক্রমে উহা পাতালে প্রবেশ করিতে লাগিল—ক্রমে উহা চক্ষের অন্তরাল হইল। সমিতির সদস্যগণ তখন নিরুদ্ধ-নিশ্বাসে শেষ মুহূর্ত্তের জন্য অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। বার্বিকেনের সাধনা শেষে সিদ্ধিলাভ করিল। গোলকটী নির্ব্বিঘ্নে কামানের তলদেশে স্থাপিত হইল। কাপ্তান নিকল্ টাকা লইয়া বার্বিকেনের নিকটেই দাঁড়াইয়াছিলেন। তিনি বার্বিকেনের কর ধারণ করিয়া কহিলেন—

 “বন্ধু! আমি আর একটা বাজিও হারলাম। এই নিন্ তার টাকা।”

৬৭