আজ দেখছ তুমি ছােটো ক’রে। নারীর মহিমায় অন্তরের ঐশ্বর্য যা তুমি দিতে পারতে, তা সরিয়ে নিয়ে তুমি বলছ—দেশকে দিলে আমার হাতে। পার না দিতে, পার না, কেউ পারে না। দেশ নিয়ে এক হাত থেকে আর-এক হাতে নাড়ানাড়ি চলে না।”
বিবর্ণ হয়ে এল এলার মুখ। বললে, “কী বলছ, ভালাে বুঝতে পারছিনে।”
“আমি বলছি নারীকে কেন্দ্র করে যে-মাধুর্যলােক বিস্তৃত, তার প্রসার যদি বা দেখতে হয় ছােটো, অন্তরে তার গভীরতার সীমা নেই,—সে খাঁচা নয়। কিন্তু দেশ উপাধি দিয়ে যার মধ্যে আমার বাসা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলে তােমাদের দলের বানানো দেশে—অন্যের পক্ষে যাই হক আমার স্বভাবের পক্ষে সেই তাে খাঁচা। আমার আপন শক্তি তার মধ্যে সম্পূর্ণ প্রকাশ পায় না বলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে, বিকৃতি ঘটে তার, যা তার যথার্থ আপন নয় তাকেই ব্যক্ত করতে গিয়ে পাগলামি করে, লজ্জা পাই, অথচ বেরােবার দরজা বন্ধ। জান না, আমার ডানা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, দুই পায়ে আঁট হয়ে লেগেছে বেড়ি। আপন দেশে আপন স্থান নেবার দায় ছিল আপন শক্তিতেই, সে শক্তি আমার ছিল। কেন তুমি আমাকে সে-কথা ভুলিয়ে দিলে।”
৬৯