পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বন্ধুত্ব যদি স্থায়ী রাখতে চাও তাহলে তোমাকেও অনেক ভুলতে হবে, বিশেষত চিঠির হিসাবটা। কিন্তু একটা কারণে আমার বিস্মরণশক্তি সম্বন্ধে তোমার অবিশ্বাস হতে পারে— তোমার ঠিকানা আমি ভুলি নি। না ভোলবার একটা কারণ এই যে, দুই তিনে যে পাঁচ (২*৩=৫) হয় এ কথাটা গুরুমশায়ের অনেক মার খেয়ে মনের মধ্যে বসে গেছে। আমার বিশ্বাস আর দশ বছর বাদে আমার বয়স যখন ৬৭ হবে তখনো ওটা ভুলবনা। আর অগস্তাকুণ্ড মনে রাখা খুব সহজ। কেননা পুরাণে পড়েচি অগস্তা এক গণ্ডষে সমুদ্র শুষে খেয়েছিলেন, সেই অগস্ত্য যে আজ কুণ্ড নিয়েই সস্তুষ্ট আছেন সেটা আমাদের বর্তমান অবস্থার সঙ্গে খুব মেলে। ওর মধ্যে একটু সান্ধনার কথা হচ্চে এই যে তোমাদের নম্বরটা নিতান্ত ছোট নয় । পদ্মার ধারের হাসেদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হল কি করে জিজ্ঞাসা করেচ। বোধহয় তার কারণ এই যে বোবার শত্রু নেই। ওরা যখন খুব দল বেঁধে চেচামেচি করে আমি চুপ করে শুনি, একটিও জবাব দিই নে। আমি এত বেশি শাস্ত হয়ে থাকি যে, ওরা আমাকে মানুষ বলে গণ্যই করে না— আমাকে বোধহয় পাখীর অধম বলেই জানে— কেন না আমার দুই পা আছে বটে কিন্তু ডানা নেই। আর যাই হোক ওদের সঙ্গে আমার চিঠিপত্র চলে না— যদি চলত তা হলে আমাকেই হার মানতে হত— কেননা ওদের ডানভিরা কলম আছে, আর ওদের সময়ের টানাটানি খুব কম। তোমাকে যে এত বড় চিঠি লিখলুম আমার ভয় হচ্চে পাছে বিশ্বাস না কর যে আমার সময় কম। অনেক কাজ পড়ে আছে— কাজ ফাকি দিয়েই তোমাকে চিঠি লিখচি– কাজ যদি না থাকৃত তাহলে কাজ ফাকি দেওয়াও চলত না। তোমার কাছে আমার অনেক দোষ ধরা পড়চে– আমি যে কাজ ফাকি দিয়ে থাকি এ কথাটাও ফাস হয়ে গেল। এ জন্য S (2.