পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপদেশ বাক্যে, আমার সেই জ্বালাময়ী বাগিতায় সেই সভায় এমন অল্পবুদ্ধি, এমন জড়প্রাণ একজনও ছিল না ম্যালেরিয়ার অপকারিতায় যার কিছুমাত্র সংশয় ছিল। সকলেই বারবার বলতে লাগল, “ধন্য সার রবীন্দ্রনাথ, ধন্য ডাক্তার রবীন্দ্রনাথ, ধন্য বিশ্ববরেণ্য কবি, ম্যালেরিয়া যে এমন সৰ্ব্বনাশিনী এ কথা এমন ওজোময়ী বিশদভাষায় আর কোনোদিন কারো কাছে শোনা যায় নি। আজ হতে আমরা সকলেই দৃঢ় সঙ্কল্প হলেম আর কোনোদিন তালবৃন্ত বাজনে তাকে দূরীকৃত করব, নয় বীরোচিত অধ্যবসায় সহকারে নিৰ্ভয়ে নিঃসংকোচে তাকে যমসদনে প্রেরণ করব।” আমার বক্তৃতার এই আশু ফল দেখে আমি বড়ই তৃপ্তি ও সান্তনা লাভ করেচি। সভা থেকে ফিরে আসতে আসতে চিৎপুর রোডের জনতার মাথার উপর দিয়ে হয়ে আমার কর্ণকুহরে বাজতে লাগল— “বৎস, সার্থক তোমাকে জন্ম দিয়েচি।” আমারও মনে হতে লাগল, সুজলা সুফলা মলয়জশীতলা এই যে সপ্তকোটিকণ্ঠকলকলনিনাদকরলা বঙ্গভূমিতে আমি এতদিন জীবন-যাপন করে এলুম, আজ তার ঋণ শোধ করতে পারলুম, আজ আমার ভাই বাঙ্গালীকে— যে বাঙ্গালী প্রতাপাদিত্যের বংশধর, যে বাঙালী সিংহলজয়ী বিজয়সিংহের বিজয়গৌরবমণ্ডিত, যে বাঙালী রঘুনন্দনের স্মৃতিভায্যের জটিল বটবৃক্ষচ্ছায়ায় লালিত সেই আমার ভাই বাঙ্গালীকে আজ স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছি যে ম্যালেরিয়া একটা রোগ, এবং যে-কেহ স্বাস্থ্য লাভ করতে ইচ্ছুক এই রোগের হাত থেকে তার পরিত্রাণ পাওয়া চাই। আবার কাল শাস্তিনিকেতনে ফিরব। আগামী ১০ মার্চে মঞ্জুর বিবাহ।" সেই বিবাহে আমাকে উপস্থিত থাকতে হবে। বোধহয় ৭ই মাচর্চ তারিখে কলকাতায় আসব, তারপরে ১৪ই মার্চে চীনে যাত্রা করব। খুব বেশি উৎসাহ বোধ হচ্চে না, কেননা শরীর ভাল নেই। কিন্তু চীনের নিমন্ত্রণ ૨G છે