পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিরোধার্য করেন— শুধু রাণুকে লেখা চিঠিতে নয়, দেশ ও বিদেশের বহু সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তার এই চিরন্তন সাতাশ বছর বয়সের কথা তিনি সগর্বে উল্লেখ করেছেন। রাণুকে লেখা রবীন্দ্রনাথের পত্রাবলিতে দুটি সুস্পষ্ট ভাগ দেখা যায়— একটি রাণুর সঙ্গে সাক্ষাৎপরিচয়ের পূর্ববর্তী ও অপরটি প্রত্যক্ষ পরিচয়ের পরবর্তীকালের। তার সব চিঠিই যে পাওয়া গেছে তা নয়, কিন্তু বর্তমান সংকলনের ২০৮টি চিঠির হিসাব নিলে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৭টি রাণুর সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয়ের আগে লেখা— সময়কাল ১৯ অগাস্ট ১৯১৭ থেকে ১৫ এপ্রিল ১৯১৮ আট মাস, গড়ে মাসে একটিরও কম; সেক্ষেত্রে মাসাধিককাল শান্তিনিকেতনে একত্র বাসের পরে কেবলমাত্র জুলাই মাসে (১০-৩১ জুলাই ১৯১৮) লিখিত পত্রের সংখ্যা ৯টি। প্রথম পর্বের চিঠিগুলি নিতান্ত কৌতুকের ভঙ্গিতে লেখা— কিন্তু সাক্ষৎপরিচয়ের পরে লেখা চিঠিগুলির সুরে গভীরতার স্পর্শ অনুভব করা যায়, কৌতুক সেখানেও আছে, কিন্তু স্নেহ ও কল্যাণকামনা তাদের অনেকটাই আর্দ্র করে তুলেছে। এর কারণটি নিহিত আছে যে-অবস্থায় রাপুর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হল, তার মধ্যে। রাণু তার প্রায় প্রতিটি পত্রেই কাশীতে আসার জন্য রবীন্দ্রনাথকে আহবান জানিয়েছেন, শেষে গঙ্গার পরপারে ভ্রমণের একটি বিবরণ দিয়ে প্রলোভন দেখিয়েছেন, আপনি যখন আসবেন তখন আপনাকেও নিয়ে যাব। কিন্তু আপনি আসেন কই। শেষ পর্যন্ত রাণু নিজেই এলেন দেখা করতে। তাঁর পিতা ফণিভূষণ গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন বৈশাখ ১৩২৫-এর শেষে— ভবানীপুরের বাসার ঠিকানা দিয়ে রাণু দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে দাবি জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ যেন অবশ্যই আসেন, নয়ত জন্মের মতন আড়ি’। কিন্তু তাকে হারিয়ে দিয়ে তিনি নিজেই এলেন ১ জ্যৈষ্ঠ ১৩২৫ (১৫ মে ১৯১৮) সন্ধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ তাকে ভয় দেখিয়ে লিখেছিলেন, “আমাকে দেখতে নারদ মুনির মত— মন্ত বড় পাকা ৫২৯ >も* ●8