পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দাড়ি’— কিন্তু রাণু ভয় পান নি, পরে রবীন্দ্রনাথ নিজেই স্বীকার করেছেন (২৫ অগাস্ট ১৯১৮), আমি যখন তোমাকে লিখেছিলুম যে, আমাকে ভুলই করেছিলুম— আমি যে ছ ফুট লম্বা মানুষ, এত বড় গোফ দাড়িওয়ালা কিভূতকিমাকার লোক, আমাকে দেখে তোমার মুখশ্রী একটুও বিবর্ণ হল না এসে যখন আমার হাত ধরলে তখন তোমার হাত একটুও কাপল না, অনায়াসে কথাবাৰ্ত্তা আরম্ভ করে দিলে, কণ্ঠস্বরে একটুও জড়িমা প্রকাশ হলন– একি কাণ্ড বল দেখি? এর পরের দিনই তাকে একটি অত্যন্ত দুঃখের আঘাত সহ্য করতে হয়েছে, তার প্রথম সস্তান মাধুরীলতা (বেলা) দীর্ঘদিন রোগে ভুগে মাত্র বত্রিশ বৎসর বয়সে পরলোকগমন করেন। এই পরম দুঃখের দিনে রাণুই তার একমাত্র সাস্তুনা হয়ে এসেছেন। সেইদিনই বিকেলে তিনি রাণুদের ভবানীপুরের বাসায় উপস্থিত হয়েছেন এবং তার পরে যতদিন কলকাতায় ছিলেন প্রায়ই গেছেন তাদের বাড়ি। ২৭ জুলাই তাকে লিখেছেন, “আমার খুব দুঃখের সময়েই তুমি আমার কাছে এসেছিলে ;– আমার যে মেয়েটি সংসার থেকে চলে গেছে সে আমার বড় মেয়ে, শিশুকালে তাকে নিজের হাতে মানুষ করেছি, তার মত সুন্দর দেখতে মেয়ে পৃথিবীতে খুব অল্প দেখা যায়। কিন্তু সে যে মুহুৰ্ত্তে আমার কাছে বিদায় নিয়ে চলে গেল সেই মুহুৰ্ত্তেই তুমি আমার কাছে এলে— আমার মনে হল যেন এক মেহের আলো নেববার সময় আর এক স্নেহের আলো জ্বলিয়ে দিয়ে গেল। আমার কেবল নয়, সে দিন যে তোমাকে আমার ঘরে আমার কোলের কাছে দেখেচে তারই ঐকথা মনে হয়েচে । তাকে আমরা বেলা বলে ডাকতুম, তার চেয়ে ছোট আর এক মেয়ে আমার ছিল তার নাম ছিল রাণু, সে অনেকদিন হল গেছে। এই দুটি শূন্য স্থান পূর্ণ করেছেন রাণু অধিকারী— সাতার বছরের পুরুষের কাছে এগারো বছরের বালিকা মেয়ের ভূমিকা নিতে পারেন না, তাই রাণুর সম্বোধন Qぐ)の