পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিজের সাধনায় স্তরে স্তরে জমি উচু করেছি, আর অঁাট করেছি তার মাটি। এখন একটা সাধারণ উৎকর্ষ সহজ হয়েছে সমস্ত সাহিত্য জুড়ে। তাই তখনকার লেখার সঙ্গে এখনকার লেখার জাত গেছে বদল হয়ে । আমার তো মনে হয় আমার রচনার দুইবয়সের মধ্যে ঐক্যই নেই, কী ভাবের দিক থেকে কী ভাষার দিক থেকে। আমাদের চিত্তের জন্মান্তর হয়ে গেছে। তাই আমার এই গ্রন্থাবলীর গোড়ায় রয়েছে চৌরঙ্গীর মিউজিয়ম আর তার সঙ্গে জোড়া হচ্চে আলিপুরের পশুশালা। স্পেণ্ডর ও ফস্টরের দুটি চটি বই পড়লুম। আমার নিজের মত এই যে আমরা অর্থনীতি বা ধর্মনীতিতে যে দলেরই লোক হই আমাদের সেই দলাদলি যে সাহিত্যকে বিশেষ ছাদে গড়ে তুলবেই এমন কোনো কথা নেই। রসের দিক থেকে মানুষের ভালোমন্দ লাগা কোনো মতকে মানতে বাধ্য নয়। আমার মনটা হয়তো সোশিয়লিস্ট, আমার কর্মক্ষেত্রে তা ভিতর থেকে প্রকাশ পেতেও পারে কিন্তু উর্বশী কবিতাকে সে স্পর্শও করে না । শালের কাঠ এবং শালের মঞ্জরীর প্রকাশ স্বতন্ত্র। মার্কসিজমের ছোয়াচ যদি কারো কবিতায় লাগে, অর্থাৎ কাব্যের জাত রেখে লাগে, তাহলে আপত্তির কথা নেই, কিন্তু যদি নাই লাগে তাহলে কি জাত তুলে গাল দেওয়া শোভা পায় ? কেমিষ্ট্রর ল্যাবরেটরি যদি ভালোয় ভালোয় জুড়তে পার রান্নাঘরে, তবে সায়ান্সের জয়জয়কার করব কিন্তু নাই যদি পারো তাহলে হারজিতের তর্ক তুলব না, ভোজনটার ব্যাঘাত না হোলেই হোলো । ૨ જે (: