পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বউনি করুব সঙ্কল্প ক’রে রামানন্দবাবুকে সঙ্গে নিয়ে রবিবাবুর কাছে গেলাম। রামানন্দবাবু আমার উদ্দেশ্য ব্যক্ত করলে রবিবাবু বললেন— “এর জন্য আপনার কোনো সুপারিশ আনবার অবিশ্বক ছিল না । কেউ যদি আমার এই সমস্ত কুকর্মের ভার নিয়ে আমাকে নিশ্চিস্ত করেন সে তো আমার পরম উপকার করা হবে। আপনি যবে বলবেন আমার সব বই আপনার হাতে সঁপে দিয়ে আমি নিশ্চিস্ত হবে।” এই হলো তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠত হওয়ার সূত্রপাত । এই সময় সত্যেগ্র দত্তের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তখন র্তার ‘তীৰ্থসলিল ছাপা চলছে। তিনি প্রায় রোজই সন্ধ্যাবেলা প্রেস থেকে প্রফ নিয়ে আমার বাসায় আসতেন আর আমাকে তার কবিতা শোনাতেন। একদিন জামি তার 'বেণু ও বীণা’ উৎসর্গ সম্বন্ধে তাকে প্রশ্ন করলাম “এ বইটা আপনি কাকে উৎসর্গ করেছেন ?” সত্যেক্স বললেন—“আপনিই বলুন না।” সেই উৎসর্গে লেখা আছে— ধিনি জগতের সাহিত্যকে অলঙ্কত করিয়াছেন যিনি স্বদেশের সাহিত্যকে অমর করিয়াছেন ধিনি বর্তমান যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক সেই অলোকসামান্য শক্তিসম্পন্ন কবির উদ্দেশে এই সামান্ত কবিতাগুলি সসম্ভমে অপিত হইল। আমি বললাম-“ইনি হয় শেক্সপীয়ার, আর নয় রবিবাবু।” সত্যেন্দ্র উত্তর করলেন—“স্বদেশের কবি থাকৃতে আমি বিদেশে যাব কেন ?” 賺 আমার আনন্দের অবধি থাকুল না। আমার মনে মনে ধারণা ছিল ষে রবিবাবু জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কবি। কিন্তু তখনও আমাদের দেশে তার প্রতিভা সর্বজনসমাদৃত হয় নি, একদল নিন্দক প্রবল হ’য়ে তাকে খাটে। ३. ७९७