পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যাপ্ত হয়ে—— স্তব্ধ হয়ে একা একা বেড়াই যখন, তখন সেই অনাহত বীণার আলাপে মন ওঠে ভরে । এই হোলো গানের অস্তলীন গভীরতা। তার পরে হয় তো ঘরে এসে দেখি গান শোনবার লোক বসে আছে– তখন গান ধরি, “প্যালা ভর ভর লায়ীরি।” সেই ধ্বনিলোকে দেহমন সুরে সুরে মুখরিত হয়ে ওঠে, যা-কিছুকে সেই সুর স্পর্শ করে তাই হয় অপূর্ব। এও তো ছাড়বার জো নেই। সুরের গান, না-স্বরের গান, কাকে ছেড়ে কাকে বাছব ? আমি দুইকেই সমান স্বীকার করে নিয়েছি । এক জায়গায় কেবল আমার বাধে । খেলনা নিয়ে নিজেকে ভোলাতে আমি কিছুতেই পারি নে। এটা পারে নিতান্তই শিশু বধু। সাখী আছেন কাছে বসে র্তার দিকে পিছন ফিরে খেলনার বাক্স খুলে বসা একেবারেই সময় নষ্ট করা । এতে করে সত্য অনুভূতির রস যায় ফিকে হয়ে । ফুল দিতে চাও দাও না, এমন কাউকে দাও যে-মানুষ ফুল হাতে নিয়ে বলবে বাঃ– তার সেই সত্য খুসি সত্য আনন্দে গিয়ে পৌছয় । শিলাইদহের বোষ্টমী আমার হাতে আম দিয়ে বললে, তাকে দিলুম। এই তো সত্যকার দেওয়া— আমারই ভোগের মধ্যে তিনি আমটিকে পান। পূজার ব্রাহ্মণ সকালবেলায় গোলক চাপার গাছে বাড়ি মেরে ফুল সংগ্রহ করে ঠাকুরঘরে যেত— তার নামে পুলিশে নালিষ করতে ইচ্ছা করত— ঠাকুরকে ফাকি দিচ্চে বলে। সেই ফুল আমার মধ্যে দিয়েই ঠাকুর গ্রহণ করবেন বলেই গাছে ফুল ফুটিয়েছেন আর আমার মধ্যে ফুলে আনন্দ V)