পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেল, দুটি একটি অসময়ের বেল ফুল দেখা দেয় তারা ক্লাস্ত হয়ে এল বলে । আমার সামনেই পলাশ সোদাল হিমঝুরি সোনাঝুরি কদম জারুলের বীথিক। সোজা চলে গিয়ে সদর রাস্তায় উত্তীর্ণ হয়েচে । তাদের ফাকের মধ্যে দিয়ে রাঙামাটির পথের এক টুকরো দেখা যায় – আমার ইচ্ছে করে সব দায়িত্ব ফেলে দিয়ে এই ছায়াবৃত দিনে সামনে তাকিয়ে বসে ভাবি আপন মনে । এই দানটুকু শুনতে সুলভ কিন্তু ভাগ্যে খুব অল্পই জোটে — বন্দী অামি কৰ্ত্তব্যের সশ্রম কারাবাসে । তোমার চিঠি পড়ি, তোমার কথা ভাবি । একটা কথা বার বার মনে আসে তোমার চিরাভ্যস্ত ধৰ্ম্মমত ও আচার থেকে অামি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করি নি বিক্ষিপ্ত করেছি। তাই নিয়ে তোমার নিরন্তর দ্বন্দ্ব চলচে– অথচ এ তুঃখ আমি কোনোদিন তোমাকে দিতে ইচ্ছা করি নি । কারো মত নিয়ে অামার কোনো জেদ নেই, ধৰ্ম্মবিশ্বাসের পার্থক্য নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কারো প্রতি আমার মনের বিরুদ্ধতা জাগে না । কেবল গোড়া মুসলমানদের মতো যারা ধৰ্ম্মান্ধ তাদের প্রতি মনকে শাস্ত রাখা আমার পক্ষে কঠিন হয় । তোমার নিষ্ঠাভক্তির মধ্যে যে মাধুর্য্য অাছে সেটাকে তামি যে কেবলমাত্র শ্রদ্ধা করতে পারি তা নয় তার সৌন্দর্য্যে আনন্দিত হতে পারি। আমার বুদ্ধিবিচারের সঙ্গে তার সম্পূর্ণ মিল হতে পারে না, এমন কি তার মধ্যে হয়তো অনেক কিছু থাকতে পারে যেটা আমার মতে আমাদের দেশের কল্যাণের অন্তরায় । কিন্তু মতের সঙ্গে মতান্তরের সংঘাত যতই হোক তাতে মানুষের প্রতি আমার সৌহার্দ্যকে ক্ষুন্ন করে Q@@