পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বুদ্ধিকে চিন্তাকে সেবাকে আমার সমগ্র শক্তিকে, সম্পূর্ণ মনুষ্যত্বকে । তখন থেকে জীবনে আর এক পৰ্ব্ব মুরু হোলো । একটা আরেকটাকে প্রতিহত করলে না— মহাসাগরে পরিবেষ্টিত মহাদেশের পালা এলো । মাতামাতি ঐ রসসাগরের দিকে, আর ত্যাগ ও তপস্যা ঐ মহাদেশের ক্ষেত্রে । কাজেও টানে, নেশাতেও ছাড়ে না। বহুদিন আমার নেশার দুই মহল ছিল বাণী এবং গান, শেষ বয়সে তার সঙ্গে আর একটা এসে যোগ দিয়েছে— ছবি । মাতনের মাত্রা অনুসারে বাণীর চেয়ে গানের বেগ বেশি, গানের চেয়ে ছবির । যাই হোক এই লীলাসমুদ্রেই আরম্ভ হয়েচে আমার জীবনের আদি মহাযুগ— এইখানেই ধ্বনি এবং নৃত্য এবং বর্ণিকাভঙ্গ, এইখানেই নটরাজের আত্মবিস্মৃত তাণ্ডব । তার পরে মধ্যযুগে নটরাজ এলেন তপস্বীবেশে ভিক্ষুরূপে । দাবীর আর শেষ নেই। ভিক্ষার ঝুলি ভরতে হবে— ত্যাগের সাধনা কঠিন সাধনা । এই লীলা এবং কৰ্ম্মের মাঝে মাঝে নৈষ্কৰ্ম্ম্যের অবকাশ পাওয়া যায়। ওটাকে আকাশ বলা যেতে পারে, মনটাকে শূন্যে উড়িয়ে দেবার স্বযোগ ঐখানে— ন আছে বাধা রাস্তা, না আছে গম্যস্থান, না আছে কৰ্ম্মক্ষেত্র । শরীর মন যখন হাল ছেড়ে দেয় তখনি আছে এই শূন্ত । সম্প্রতি কিছুদিন এই অবকাশের মধ্যে ছিলুম— আপিসও ছিল বন্ধ, আমার খেলাঘরেও পড়েছিল চাবী । এই ফাকের মধ্যেই তোমার চিঠি এল আমার হাতে, পড়তে ভালো লাগল,— ভালো লাগবার প্রধান কারণ, এই চিঠির মধ্যে তোমার একটি সহজ আত্মপ্রকাশ আছে, এই 8 o