পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহজ প্রকাশের শক্তি একেবারেই সহজ নয়। অধিকাংশ লোক আছে যারা প্রায় বোবা, আর একদল আছে যারা কথা কয় পরের ভাষায়, যারা নিজের চেহারা দাড় করাতে চায় পরের চেহারার ছাচে । তোমার সমস্ত প্রকৃতি কথা কয়, ঝরনা যেমন কথা কয় তার সমস্ত ধারাটাকে নিয়ে । আমি বুঝতে পারি আমাকে চিঠি লেখায় তোমার আস্তরিক প্রয়োজন আছে। প্রকাশ করবার আবেগ তোমার মধ্যে আছে, তার উপলক্ষ্য চাই । আমি স্নেহের সঙ্গে শুনচি জেনে তুমি মনের আনন্দে অবাধে কয়ে যাচ্চ। অামাকে তুমি দেখো নি, স্পষ্ট করে জানো না, সেও একটা সুযোগ । কেননা তোমার শ্রোতাকে তুমি নিজের মনে গড়ে নিয়েচ। তার অনতিস্ফুট পরিচয়ই একটা আবরণ, তার অন্তরালে অসস্কোচে আপন মনে কথা বলে যেতে পারেী । ছুটি ছিল,— না টেনেছিল আসল কাজে, না জমেছিল বাজে কাজ । তাই আমিও তোমাকে চিঠি লিখতে পেরেছি। কিন্তু যখন নামবে বর্ষা, কাজের বাদল, তখন আর সময় দিতে পারব না। আর বেশি দেরি নেই । ইতিমধ্যে দুই একদিন ছবি আঁকার পাকের মধ্যে পড়েছিলুম, ভুলেছিলুম পৃথিবীতে এর চেয়ে গুরুতর কিছু আছে। যদি পুরোপুরি আমাকে পেয়ে বসত তাহলে আর কিছুতেই মন থাকত না । ওদিকে কাজের দিনও এলো বলে, তখন সময়ের মধ্যে ফাক প্রায় থাকবে না । কথাটা তোমাকে জানিয়ে রাখচি, কারণ, অামার চিঠি পাওয়া তোমার অভ্যাস হয়ে আসচে, বন্ধ যখন হয়ে যাবে তখন মনে কোরো না তার কারণ উপেক্ষা । আমার সময়ের উপর వU8 8 \