পাতা:চিঠিপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড ১৯৯৩)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈজ্ঞানিকদের মনে উৎসাহ ও সমাজের অগ্রণীদের মধ্যে শ্রদ্ধা পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। সভাস্থ দুই একজন সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ মনীষী ধীরে ধীরে আচার্য্যের নিকট উপস্থিত হইলেন এবং তাহার উচ্চারিত বচনের জন্য ভক্তি ও বিস্ময় স্বীকার করিলেন । আমরা অনুভব করিলাম যে, এতদিন পরে ভারতবর্ষ— শিষ্যভাবেও নহে, সমকক্ষভাবেও নহে, গুরুভাবে পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিকসভায় উখিত হইয়া আপনার জ্ঞানশ্রেষ্ঠতা সপ্রমাণ করিল,— পদার্থতত্ত্বসন্ধানী ও ব্রহ্মজ্ঞানীর মধ্যে যে প্রভেদ, তাহা পরিস্ফুট করিয়া দিল । লেখিকার পত্র হইতে সভার বিবরণ যাহা উদ্ধৃত করিলাম, তাহা পাঠ করিয়া আমরা অহঙ্কার বোধ করি নাই । আমরা উপনিষদের দেবতাকে নমস্কার করিলাম ; ভারতবর্ষের যে পুরাতন ঋষিগণ বলিয়াছেন “যদিদং কিঞ্চ জগৎ সৰ্ব্বং প্রাণ এজতি” এই যাহা কিছু সমস্ত জগৎ প্রাণেই কম্পিত হুইতেছে, সেই ঋষিমণ্ডলীকে অস্তরে উপলব্ধি করিয়া বলিলাম, হে জগদগুরুগণ, তোমাদের বাণী এখনও নিঃশেষিত হয় নাই, তোমাদের ভষ্মাচ্ছন্ন হোমহুতাশন এখনো অনিৰ্ব্বাণ রহিয়াছে, এখনো তোমরা ভারতবষের অস্তঃকরণের মধ্যে প্রচ্ছন্ন হইয়া বাস করিতে ছ ? তোমরা আমাদিগকে ধ্বংস হইতে দিবে না, আমাদিগকে কৃতার্থতার পথে লইয়া যাইবে । তোমাদের মহত্ব আমরা যেন যথার্থভাবে বুঝিতে পারি। সে মহত্ব অতিক্ষুদ্র আচারবিচারের তুচ্ছ সীমার মধ্যে বদ্ধ নহে,— আমরা অদ্য যাহাকে “হিন্দুয়ানি” বলি, তোমরা তাহা লইয়া তপোবনে বসিয়া কলহ করিতে না, সে সমস্তই পতিত ভারতবর্ষের আবর্জনামাত্ৰ ; — তোমরা যে অনস্তবিস্তৃত লোকে আত্মাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলে, সেই লোকে যদি আমরা চিত্তকে জাগ্রত করিয়া তুলিতে পারি, তবে আমাদের জ্ঞানের দৃষ্টি গৃহপ্রাঙ্গণের মধ্যে প্রতিহত না হইয়া বিশ্বরহস্তের >> R