পাতা:চিঠিপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড ১৯৯৩)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এগিয়ে দেবার কিছু না কিছু পালের হাওয়া সে জুগিয়ে থাকে। সকল বাধার উপরে তিনি যে জয়লাভ করবেনই, এই বিশ্বাস আমার মধ্যে ছিল অক্ষুন্ন। নিজের শক্তির পরে তার নিজের যে শ্রদ্ধা ছিল, আমার শ্রদ্ধার আবেগ তাতে অনুরণন জাগাত সন্দেহ নেই। এই গেল আদিকাণ্ড। তার পরে আচার্য র্তার পরীক্ষালব্ধ তত্ত্ব ও সহধর্মিণীকে নিয়ে সমুদ্রপারের উদ্যোগে প্রবৃত্ত হলেন। স্বদেশের প্রতিভা বিদেশের প্রতিভাশালীদের কাছ থেকে গৌরব লাভ করবে, এই আগ্রহে দিন রাত্রি আমার হৃদয় ছিল উৎফুল্ল । এই সময় যখন জানতে পারলুম স্বাত্রার পাথেয় সম্পূর্ণ হয় নি, তখন আমাকে উদ্বিগ্ন করে তুললে । সাধনার আয়োজনে অর্থাভাবের শোচনীয়তা যে কত কঠোর, সে কথা দুঃসহভাবেই তখন আমার জানা ছিল । জগদীশের জয়যাত্রায় এই অভাব লেশমাত্রও পাছে বিঘ্ন ঘটায়, এই উদ্বেগ আমাকে আক্রমণ করলে । দুর্ভাগ্যক্রমে আমার নিজের সামর্থ্যে তখন লেগেছে পূরো ভাটা। লম্বা লম্বা ঋণের গুণ টেনে অভূমি নত হয়ে চালাতে হচ্ছিল আমার আপন কর্মতরী । অগত্য সেই দুঃসময়ে আমার এক জন বন্ধুর শরণ নিতে হোলো । সেই মহদাশয় ব্যক্তির ঔদার্থ্য স্মরণীয় বলে জানি । সেই জন্যেই এই প্রসঙ্গে তার নাম সম্মানের সঙ্গে উল্লেখ করা আমি কর্তব্য মনে করি । তিনি ত্রিপুরার পরলোকগত মহারাজা রাধাকিশোর দেবমাণিক্য। আমার প্রতি র্তার প্রভূত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা চিরদিন আমার কাছে বিস্ময়ের বিষয় হয়ে আছে। ঠিক সেই সময়টাতে র্তার পুত্রের বিবাহের উদ্যোগ চলছিল। আমি তাকে জানালুম শুভ অনুষ্ঠানের উপলক্ষ্যে আমি দানের প্রার্থী, সে দানের প্রয়োগ হবে পুণ্যকৰ্ম্মে । বিষয়টা কী শুনে তিনি ঈষৎ হেসে বললেন, “জগদীশচন্দ্র এবং তার কৃতিত্ব সম্বন্ধে আমি বিশেষ কিছুই জানি নে, আমি যা দেব, সে আপনাকেই দেব, আপনি তা নিয়ে কী > えぐ2