Ship) থাকে। একখানি ক্ষুদ্র জাহাজ মাঝ সমুদ্রে নাঙ্গর করিয়া তাহার উচ্চ মাস্তুলে আলো জ্বালে। পথে এইরূপ আলোক-জাহাজও অনেক জায়গায় দেথা যায়।
তিন দিন দুই রাত্রি ক্রমাগত জাহাজ চালাইয়া তৃতীয় দিন সন্ধ্যার সময় এলিফেণ্ট পয়েণ্টের (Elephant Point) আলোক-গৃহ দেখা গেল। কলিকাতা হইতে রেঙ্গুন ৭৬০ মাইল হইবে। আমাদের জাহাজখানি মেল অর্থাৎ ডাক লইয়া আসিতেছে, তাই অপেক্ষাকৃত শীঘ্র আসিয়া পৌঁছিল। অন্য ষ্টীমারে পৌছিতে আরও এক দিন দেরি হয়।
সকল স্থানেই জমির সন্নিকটবর্ত্তী হইলেই কতকগুলি চিহ্ন দ্বারা বেলাভূমি দেখিতে পাইবার বহু পূর্ব্বে জমি যে নিকটে আছে, তাহা বেশ বুঝা যায়। সমুদ্রজলের ঘোর নীল রঙ সবুজ হইয়া উঠে। জমির দ্রব্যাদি ও গাছপালা জলে ভাসিতে দেখা যায়। নদীতে বিচরণকারী পাখী সকল উড়িয়া আসিয়া চারিদিকে বেড়ায়।
সন্ধার সময় আমরা ইরাবতীর মোহনায় প্রবেশ করিলাম। জাহাজের মাস্তুলে রাজার ডাকের (Royal Mail) নিশান উড়াইয়া দেওয়া হইল। নদীর মধ্যে প্রবেশ করিবার সময় জাহাজ বাঁশী বাজাইয়া হুঙ্কার করিল। সকলেরই মনে আনন্দ হইল। নূতন দেশের নূতন হাওয়া আমাদের গায়ে লাগিতে লাগিল। ক্ষুদ্রকায় তৃতীয়ার চাঁদ শুকতারার সঙ্গে লাল সন্ধ্যাকাশে দেখা দিল। বৃহস্পতিও উদয়োন্মুখ। অগণ্য তারাদল ইরাবতীবক্ষে ও ব্রহ্মদেশের সমতল ভূমির উপর উদয় হইল।
ওই ব্রহ্মদেশ ও এই ইরাবতী নদী ভারতবর্ষেরই পাশে, সংস্কৃত নামে অভিহিত। গৌতম বুদ্ধের প্রবর্ত্তিত “সর্ব্বজীবে দয়াধর্ম্ম” এখানেও প্রচলিত। ইহারা আমাদের প্রতিবাসী ও কত নিকট আত্মীয়।