সে প্রচণ্ড শীতে একরূপ শুস্ক ভাব আছে, —আমাদের দেশের মত হিম পড়ে না। সেই কারণেই, সে ঠাণ্ডা তত অনিষ্টকর হয় না। নতুবা কলিকাতায় আমরা অতি শীত কখনও দেখিতে পাই না। বোধ হয়, গাছপালাহীন পাতারের দেশ বলিয়াই শীতের এত অধিক্য।
সূর্য্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কেবল আমার একই চিন্তা আসিত —কখন তীরে নামিব, কখন সুইচিনের সহিত দেশ দেখিতে যাইব। সুইচিনের সহিত আমার প্রথম দিনেই জাহাজে আলাপ হয়; আমি ব্যস্ত হইয়া আলাপ করিবার মত লোক খুঁজিতাম,—সুতরাং প্রথম সাক্ষাতেই,—চারিচক্ষু এক হইবা মাত্রই আলাপ হুইয়া গোল। আলাপে যে আমার কত সুবিধা হইয়াছিল, তা’ বলিবার নয়।
তিনি জাহাজের এজেণ্ট; সুতরাং তীরের নিকটেই তাঁহার আফিস। আর চীনদেশের লোকের একটি প্রথা দেখিলাম, —তাঁহারা যেখানে কাজ করেন, সেইখানেই বাস করেন। সাজিয়া গুজিয়া দূর হইতে আসিয়া আফিস করিতে হয় না। ইহার ফলে তাঁহারা দিনরাতই কাজ করিতে প্রস্তুত। যাঁহারা কলিকাতায় চীনে জুতাওয়ালদের দেখুিয়াছেন, তাঁহারা কতকটা ইহা বুঝিবেন। সুইচিন সপরিবারে ঠিক তীরের উপর একটী বাড়ীতে বাস করিতেন। ঘণ্টা কতকের মধ্যে এত সৌহৃদ্য জন্মিয়াছিল যে, দিনে ৪।৫ বার তাঁর বাড়ী যাইতাম। তিনি জাহাজের এজেণ্ট বলিয়া আমার আর সাম্পান্ ভাড়া লাগিত না। তিনি সব মাঝিকে বলিয়া দিয়াছিলেন, আমার নিকট হইতে যেন তাহারা ভাড়া না লয়। আমি কিন্তু বক্সিস্ বলিয়া তাদের বেশী বৈ কম দিতাম না। আমাকে জাহাজ হইতে নামিতে দেখিলেই তাহারা ৫।৭ খানি নৌকা আনিত। সকলেরই আগ্রহ,—আমি তারই নৌকায় চড়ি!
এই সকল সুবিধা থাকায়, একটু সুযোগ পাইলেই সুইচিনের বাড়ী