পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
১৭

মান আশার অধিক অর্থ পাইয়া হাসিমুখে সেলাম করিয়া বিদায় হইল।

 শশব্যস্তে একজন লোক দোকানের ভিতর হইতে বাহির হইয়া আসিল। বলিল, “কি চান্‌ মশায়? ভিতরে আসুন না।”

 লোকটাকে দেখিয়া বোধ হইল, তাহারই নাম নফর। তাহাকে দেখিতে কৃষ্ণবর্ণ, স্থূল, নাতিদীর্ঘ নাতিখর্ব্ব। তাহার বয়স প্রায় পঞ্চাশ বৎসর। অতি শিষ্ট শান্ত; একজন পাকা দোকানদার।

 ঘরের ভিতরে চারিজন লোক মাটীর পুতুল গড়িতেছে। সকলেই কাজে ব্যস্ত। সম্মুখে এক একটা মাটীমাখান ছোট চৌকি। চৌকির উপর এক এক তাল কাল মাটী ও কতকগুলি করিয়া ছাঁচ, একটা হাঁড়ীতে খানিক কাদাগোলা জল ছিল।

 আমি সেই লোকের মিষ্টকথায় পরিতুষ্ট হইলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, “এইটী কি নফরের দোকান?”

 লোকটা একে আমায় গাড়ী হইতে নামিতে দেখিয়াছে, তাহার উপর আমার পরিচ্ছদ নিতান্ত সামান্য ছিল না। নফরের সহিত দেখা করিব বলিয়াই আমি বাবু সাজিয়া গিয়াছি। লোকটা যখন শুনিল, “আমি নফরের দোকান খুঁজিতেছি, তখন সে এক গাল হাসিয়া বলিল, “আজ্ঞা হাঁ, এইটীই এই অধীনের দোকান। আমারই নাম নফর।”

 আগেই বলিয়াছি যে, আমিও সেইরূপ ভাবিয়াছিলাম। বলিলাম, “তোমারই নাম নফর? তুমি না কি খুব ভাল পুতুল গড়িতে পার? শুনিয়াছি, এ অঞ্চলে তোমার মত কারিগর আর নাই।”