পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
দারােগার দপ্তর, ১৬৮ সংখ্যা।

আছে। ওটী কি? জিনিষটা এমন করিয়া ভাঙ্গা হইয়াছে যে, উহাকে আর কিছুতেই চেনা যায় না।”

 হ। ইহাই বোধ হয়, সেই কালীমুর্ত্তি। হাঁ, ইহারই কথা আপনি বলিয়াছিলেন।

 আ। প্রতিমাখানি আপনি কাল পাইয়াছেন?

 হ। প্রতিমাখানি, বোধ হয় কাল প্রাতেই পাইয়াছি।

 আমি ইতিপূর্ব্বেই নফরের মুখে সে সংবাদ লইয়াছিলাম। প্রতিমখানির অবস্থা দেখিয়া বোধ হইল, জহরলাল ঘরের অন্যান্য জিনিষ যে রকমে ভাঙ্গিয়াছে, পুতুলটাকে তাহার অপেক্ষা অনেক অধিক যত্ন করিয়া গুঁড়ান হইয়াছে। কেন এমন হইল? ঘরের আরও ভাল ভাল জিনিষ থাকিতে জহরলাল এই মাটীর পুতুলটাকে এমন করিয়া ভাঙ্গিল কেন? ঘরের চারিটী দেওয়ালে চারিটী এক রকমের ইংলিস-মেড-ঘড়ি ছিল। সেগুলিকে ও রকম করিয়া গুঁড়ায় নাই কেন? এই সকল প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে উদয় হইল।

 পরক্ষণেই জোড়াসাঁকোর সুধীন্দ্রবাবুর আসবাব ভাঙ্গার কথা মনে পড়িল। সেও জহরলালের কাজ। সেখানেও জহরলাল পুতুলটীকে গুঁড়াইয়াছে। ঘরের অপরাপর জিনিষগুলিকে কেবল আছাড় মারিয়া ভাঙ্গিয়া ফেলা হইয়াছিল। জহরলাল কি রকমের পাগল? লোকের বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া বৈঠকখানার জিনিষ পত্র ভাঙ্গিবার তাৎপর্য্য কি? আর পুতুলগুলিকেই বা এ রকমে গুঁড়াইয়া ফেলিবার অর্থ কি?

 নফরের দোকানে যে তিনটী পুতুল ছিল, তাহাদেরও এই দুর্দ্দশা। সেখানেও জহরলাল পুতুলগুলিকে গুঁড়াইয়াছিল। পুতুল