হে কলম! হে লেখনী! আর কতোদিন
ঘর্ষণে ঘর্ষণে হবে ক্ষীণ?
আর কতো মৌন-মূক, শব্দহীন দ্বিধান্বিত বুকে
কালির কলঙ্ক চিহ্ন রেখে দেবে মুখে?
আর, কতাে আর
কাটবে দুঃসহ দিন দুর্বার লজ্জার?
এ দাসত্ব ঘুচে যাক, এ কলঙ্ক মুছে যাক আজ
কাজ করাে—কাজ।
মজুর দ্যাখােনি তুমি? হে কলম দ্যাখােনি বেকার?
বিদ্রোহ দ্যাখােনি তুমি? রক্তে কিছু পাওনি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তােমার দীর্ঘশ্বাস।
দিন নেই, রাত্রি নেই, শ্রান্তিহীন, নেই কোনাে ছুটি
একটু অবাধ্য হলে তখনি দ্রুকুটি;
এমনি করেই কাটে দুর্ভাগা তােমার বারাে মাস,
কয়েকটি পয়সায় কেনা, হে কলম, তুমি ক্রীতদাস।
তাই যতাে লেখাে, ততাে পরিশ্রম এসে হয় জড়ােত
—কলম! বিদ্রোহ আজ! দল বেঁধে ধর্মঘট করাে।
লেখক স্তম্ভিত হােক, কেরানীরা ছেড়ে দিক হাঁফ,
মহাজনী বন্ধ হােক, বন্ধ হােক মজুতের পাপ;
উদ্বেগ-আকুল হােক প্রিয়া যত দূর দূর দেশে,
কলম! বিদ্রোহ আজ ধর্মঘট হােক অবশেষে;
আর কালাে কালি নয়, রক্তে আজ ইতিহাস লিখে
দেওয়ালে দেওয়ালে এটে, হে কলম,
আনাে দিকে দিকে।
পাতা:ছাড়পত্র - সুকান্ত ভট্টাচার্য.pdf/২৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮